রুহদাস রোহিতের কবিতা
প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২০, ১৮:৩৬ | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২০, ১৮:৪৭
‘কিছু নেই’
এখানে কিছুই
নেই,
শুধু কয়েকটি দেওয়াল ছাড়া।
হ্যা, আছে অনেক প্রিয় মানুষের পোস্টার,
আর কিছুই নেই শুধু একটি চেয়ার ছাড়া।
সিগারেটের কয়েকটি প্যাকেট আছে,
তেমন কিছুই নেইটে বিলের কিছু বই ছাড়া।
একটি বিছানা, দুইটি বালিশ আছে
তবু দুই চোখে ঘুম নেই অশ্রু ছাড়া।
এখানে কিছুই নেই,
কবির মগজের কিছু কবিতা ছাড়া।
নির্বাসন
এ-কোথায়, কোনবনে?
নাকি খোলা প্রান্তরে আমি দাঁড়িয়ে।
আমি কি শূন্যের মাঝখানে,
নাকি গভীর অন্ধকারে?
জানিনা আমি কোথায়
কিন্তু জোনা কী রাসব
আমারই দিকে তাকিয়ে।
হয়তো আমি শেষের দিকে,
কিন্তু অতীতের কিছু প্রশ্ন আজও
দাঁড়িয়ে আছে আমাকে আঙুল দেখিয়ে।
মনে পড়ছেনা কিছুই
পাঁপ-পূর্ণ্যের হিসেবের
এখানে কোনো ব্যবস্থা নেই।
কোথায় আমি?
আমি কি কোনো জাদুর নগরে?
নাকি কোনো গহীন বনে।
আমি কি মৃত্য?
নাকি এইবার আমিও 'যাচ্ছি নির্বাসনে'।
পাঁচ দিনের আয়ু
পাঁচদিনের বিধবা,
প্রচন্ড যন্ত্রনায় কাপছে!
অন্ধকার ভবিষ্যতের সন্ধানে
একমাত্র সন্তান জন্মনিতে চলেছে।
কাকে সে ডাকবে এখন ‘বাবা’?
পাঁচ দিনের বিধবা,
অবস অনুভুতি তার
আনন্দ হলো সন্তান জন্মনেবার।
আর দুঃখ?
সেটাতো পাঁচদিন আগে
আপন স্বামী হারাবার।
রুগ্ন শরীর থেকে জন্মানো শিশু
রুগ্নোই হলো,
তিনদিন ধরে ঠোট ভেজানোর মতকরে
মাতৃদুগ্ধ পান করলো।
পোড়ামুখি বিধবা,
পাঁচদিনের মাথায় নিজেও মরলো।
পাঁচ দিনের শিশু,
ব্যাকুল সুরে কাঁদছে দুই ফোটা দুঁধের আশায়,
ওর আর কি করার
ও নিজেও এখন মৃত্যুর অপেক্ষায়।
পাঁচদিনের আয়ু লেখাছিলো
তার হাতের রেখায়।
পথ
এখানে যদি ফিরে আসি বারবার,
তাহলে কি ঘুচে যাবে সকল দুঃখ তার?
যদি স্পর্শ করি মসৃণ চুলগুলো তার
তাহলে কি ফুটে উঠবে তার মুখে হাসি একবার?
কি দেবো তাকে?
যে কিনা হাজারো মানুষের মাঝে
একা ঘুমাতে শিখেছে।
কি লেখবো তাকে নিয়ে?
যে কিনা গভীর বন্ধুত্বে জড়িয়ে গেছে
একটি পথের কুকুরের সাথে।
কোনো বস্ত্রের প্রয়োজন নেই তার গায়ের
যদিও তার হাটতে হবে অনেক পথ
তবুও কিছুর দরকার নেই পায়ের।
আজ মেনে নিলাম এখানেই আমার পথ শুরু
আর ওরা দুইজনই আমার সর্বপ্রথম গুরু।
বীর্যের খেলা
খেলা চলছে!
দেশজুড়ে এখন রক্তের খেলা।
চলছে, চলছে গাড়ী ধর্ষণ কারীর
পুরষ্কার হিসেবে থাকছে
অর্ধ-ডজন মৃত নারী।
ক্রিকেট খেলার মতো
এই খেলার নিয়ম সবাই জেনে গেছে।
আর আমার মতো কিছু দর্শকগোষ্ঠী
গ্যালারিতে বসে হাতে তালি দিচ্ছে।
কিছু সময়ের মধ্যে হবে সরাসরি প্রচার
ঘরে বসেই দেখতে পারবে নরক্তপাত
আরো থাকছে অন্যায়ের মতো মৃত ‘ন্যায়-বিচার’।
যখন জন্ম নেবে একটি ফুলের মনে কঠিন ভয়
তখন, ঠিক তখনই হবে কিছু সুনাগরিকদের জয়।
যখন কাগজের ঘ্রানে হয়ে যাবে
সব ন্যায় বিচারের দরজা বন্ধ,
তখন অলিতে গলিতে ছড়িয়ে পড়বে
পড়ে থাকা কিছু রক্তযুক্তবীর্যের গন্ধ।
এখানে খেলা চলছে,
বলি দেওয়া হচ্ছে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিছু নারীদের,
খেলা চলছে,
মানুষের নয়, মানুষরূপী কিছু বাচ্চা শুয়োরের।