গ্রাম বাঁচাতে গাছে কোয়ারেন্টাইনে ৭ যুবক!

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২০, ১৬:২৯

সাহস ডেস্ক

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা বা বিদেশফেরতদের ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তবে বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ্ তাদের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকার মতো বাড়তি ঘর কোথায়? বাধ্য হয়ে গাছের মাচায় কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন পুরুলিয়ার ৭ যুবক! যাকে ট্রি কোয়ারেন্টাইন বলা হচ্ছে।

অভিনব এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুরুলিয়া জেলার বলরামপুর থানার অযোধ্যা পাহাড় লাগোয়া ভাঙ্গিডিহ গ্রামে। লকডাউনের কারণে চেন্নাই থেকে গত সোমবার গ্রামে ফেরা সাত আদিবাসী শ্রমিক নিজেদেরকে ট্রি কোয়ারেন্টাইনে রেখেছেন।

পেটের টানে ভিনরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন ওই ৭ যুবক। করোনার দাপট বাড়তেই বাড়িতে ফিরতে বাধ্য হন তারা। কিন্তু এলাকার মাটির বাড়িতে অতিরিক্ত ঘর তো নেই। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকবেন কোথায়? তাই ৭ জনের বাড়ির কাছে গাছের ডালে মাচা খাটিয়ে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার বানানো হয়েছে। অর্থাৎ হোম কোয়ারেন্টাইনের বদলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে 'ট্রি কোয়ারেন্টিন'এ রয়েছেন তারা।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গ্রামে তাদের এক কামরার মাটির ঘর থাকলেও পরিবারের সংক্রমণের কথা চিন্তা করে সোমবার থেকে তারা স্বেচ্ছায় গাছেই রয়েছেন। গ্রামের বাইরের একটি বট গাছ ও দুটি আমগাছে তারা কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। গাছের ডালের মধ্যে তারা খাটিয়া পেতে মশারি টাঙিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের পরিবারের সদস্যরা রান্না করে গাছের নীচে রেখে যান। তারা খাবার খেয়ে বাসনপত্র ধুয়ে রেখে দেন।

তাদের একজন বিজয় সিংহ জানান, শনিবার চেন্নাই থেকে ট্রেনে চেপে রবিবার খড়গপুরে ফিরি। ডাক্তাররা তাদের দেহে করোনার কোনো লক্ষণ পাননি। তবে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেকারণেই সোমবার গ্রামে ফিরলেও গ্রামের ভিতরে প্রবেশ করেননি বলে জানান তিনি।

দলের আরেকজন বিজয় সিং সর্দার জানান, বন্ধুদের মাধ্যমে সাতটি খাটিয়া ও মশারি যোগাড় করেছি। হাতির হানার ভয়ে গাছের ডালে কোয়ারেন্টাইনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত