ঈদের ছুটিতে ফাঁকা সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র

প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২৩, ১৪:০৩ | আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৩, ১৪:৫০

ইমরান আহমদ, সিলেট

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ঈদুল আযহায় টানা ৬ দিনের ছুটিতে পর্যটক বরণে আগে থেকেই প্রস্তুত করা হয়েছিল হোটেল, মোটেল, ইকো রিসোর্ট ও গেস্ট হাউজ। কিন্তু এবারের ঈদে বৃষ্টি থাকায় পর্যটনকেন্দ্রগুলো ছিল ফাঁকা। ঈদুল আযহার দীর্ঘ ছুটিতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে নেই চিরচেনা দৃশ্য।

সরেজমিনে পর্যটনকেন্দ্র লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ ছুটির দিনের চেয়েও এবারের ঈদে লাউয়াছড়ায় পর্যটক সংখ্যা অনেক কম। এছাড়া মাধবপুর লেক, বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমান স্মৃতি কমপ্লেক্স ও সবুজ চা বাগানে দেখা যায়, ঈদের দিন পর্যটকের সংখ্যা কম থাকলেও এর পরেরদিন শুক্রবারে কিছু পর্যটক এসেছেন। শনিবারে সারাদিন বৃষ্টি হওয়ায় পর্যটকের সংখ্যা একেবারে কম দেখা যায়। তবে যেসব পর্যটক ঘুরতে এসেছেন এদের মধ্যে বেশিরভাগই স্থানীয় পর্যটক।

লাউয়াছড়া টিকেট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা শাহীন মাহমুদ বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় ঈদের এই দুইদিন লাউয়াছড়ায় পর্যটকের সংখ্যা খুবই কম। অন্য সময় যেভাবে ভিড় থাকে এখন সে ভিড় নেই। যারা এসেছেন এরমধ্যে স্থানীয় পর্যটকের সংখ্যা বেশি। বাইরের পর্যটক কম এসেছে। ঈদের দিন বিদেশী পর্যটকসহ ২৯৪ জন, এরমধ্যে রাশিয়ান পর্যটক ছিলেন ২৭ জন। রাজস্ব আয় হয়েছে ২৬ হাজার টাকা। পরের দিন শুক্রবারে ১ হাজার ২শ’ জন। রাজস্ব আয় হয়েছে ৫৫,৯৮২ টাকা। রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা।

তিনি আরও বলেন, অন্যান্য সময় ঈদের মৌসুমে লাউয়াছড়ায় প্রতিদিন কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচ হাজার পর্যটক প্রবেশ করেন। সে তুলনায় বর্তমান এই সংখ্যা খুবই কম।

বনগাঁও অরণ্যনিবাস ইকো রিসোর্টের পরিচালক মো. এহ্সান কবির সবুজ বলেন, এবারে ঈদে গত ঈদের তুলনায় অর্ধেক রুম বুকিং হয়েছে। অতি বৃষ্টি ও বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা থাকায় বাহিরের পর্যটক কম এসেছে। বিভিন্ন ছাড় দেওয়ার পরেও পর্যটকদের সাড়া নেই।

ঈদের ৩য় দিন শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত পর্যটন স্থানগুলো মানব শূন্য ছিল। ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় পর্যটকরা বিভিন্ন পরিবহনে করে লাউয়াছড়া ত্যাগ করতে দেখা যায়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা শিক্ষিকা রুসনা বেগম বলেন, ঈদের ছুটিতে পরিবারের সবাইকে সময় দেওয়া যায়। তাই ঈদের ২য় দিন লাউয়াছড়া আসলাম। যদিও কয়েক বছর আগেও একবার শীতকালে এসেছিলাম, আশা ছিলো এইবার নতুনত্ব কিছু পাবো, কিন্তু পেলাম না।

নরসিংদী থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক নাসির আহমদ বলেন, বৃষ্টির জন্য ঘুরে বেড়াতে সমস্যা হচ্ছে। হোটেল থেকে বিকেলে ঘুরতে এসেছি লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে। 

হবিগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছেন ডা. আব্দুল খালিক। তিনি বলেন, ঈদের ছুটি শুরুর পরের দিন ট্রেনে করে আমরা ভানুগাছ আসি। আসার দিন থেকে প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে এখানে। সবুজ প্রকৃতির মাঝে বৃষ্টি উপভোগ করছি। দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখছি। বৃষ্টির কারণে সাময়িক অসুবিধা হলেও প্রকৃতির সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পেরেছি।

ট্যুরিস্ট পুলিশ দায়িত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক প্রবাল সিনহা বলেন, লাউয়াছড়ায় সাধারণ সময়ে যে ভিড় থাকে ঈদের ছুটির এই দুই দিনে তেমন ভিড় নেই বললেই চলে। রাস্তাও ছিল ফাঁকা। তিনি বলেন, হয়তো দু’একদিন মধ্যে পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে পারে।