লিঙ্গ পরিবর্তন করে বিয়ে, পরে টাকা হাতিয়ে নিয়ে স্ত্রীকে তালাক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাদের পরিচয়। সেখান থেকে সম্পর্ক গড়ায় বন্ধুত্বে। নুর নবী জুলফিকারের সঙ্গে পরিচয় হয় ফেনী সরকারি কলেজের অনার্স ২০১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলামের (ছদ্মনাম)। আমিনুলের প্রতি বেশ অনুরাগ জন্মে জুলফিকারের।

সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ভারত গিয়ে অস্ত্রোপচার করে আমিনুলের লিঙ্গ পরিবর্তন করেন জুলফিকার।

জুলফিকার দাগনভূঞা উপজেলার সেকান্দরপুর গ্রামের মিয়াজী বাড়ির ছেলে জুলফিকার আর আমিনুলের বাড়ি পাশের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, কলকাতার কলেজ রোডের উপকূল নার্সিং হোমে দুইবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আমিনুলের লিঙ্গ পরিবর্তন করা হয়। পরে আমিনুলের নাম রাখা হয় বিবি কুলসুম (ছদ্মনাম)। 

ভারত থেকে ফিরে ২০১৮ সালে ২৭ জুন নোয়াখালীর জুডিসিয়াল আদালতে এফিডেভিটের মাধ্যমে তার নাম রাখা হয় কুলসুম। ২০১৯ সালের ১৪ জুন ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে তাকে বিয়ে করেন জুলফিকার।  এরপর তাকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে সহায়তার জন্য আবেদন করেন তার স্বামী।

দাগনভূঞা আতাতুর্ক স্কুল মার্কেটের মিয়াজী মেডিকেল হলের ব্যবসা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী থেকে প্রাপ্ত সহায়তা, ব্যাংক ঋণ, জায়গা বিক্রিসহ কুলসুমের নামে প্রায় ৪০ লাখ টাকা কৌশলে হাতিয়ে নেয় তার স্বামী। 

কুলসুমের চিকিৎসা খরচ বাবদ এই টাকা খরচ হয়েছে, যে কারণে তাকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায় জুলফিকার। টাকা ফেরত দিয়ে দ্বন্দ্বের জের স্ত্রীকে তালাক দেয় এবং টাকা পরিশোধে গড়িমসি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

বিষয়টি নিয়ে রামনগর ইউনিয়ন পরিষদে সালিশি বৈঠকে দেনমোহর ছাড়া বাকি টাকা দিতে নারাজ তিনি। প্রতারণা, টাকা আত্মসাত ও মারধরের অভিযোগ এনে দাগনভূঞা থানা ও আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী।

বিবি কুলসুম জানান, প্রেমের ফাঁদে ফেলে তার লিঙ্গ পরিবর্তন করে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে এক মেয়ে রয়েছে। তাকে কখনো ছেড়ে যাবেন না বলে অঙ্গিকার করলেও তিনি তালাক দিয়ে প্রতারণা করেছেন। তিনি প্রতারক স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি নুর নবী জুলফিকার।

রামনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, এ ধরনের সালিশ তিনি অতীতে করেননি। সালিশের রায় মেনে নেয়ার অঙ্গিকার করলেও পরে কাবিনের টাকা ছাড়া আর কোন দারি তিনি পরিশোধ করবেন না বলে সাফ জানিয়েন জুলফিকার। এর প্রেক্ষিতে বিষয়টি অমিমাংসিত রয়েছে।