লোহাগড়ায় জনতার মুখোমুখি এমপি মাশরাফি

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০২২, ১৭:১২

জান্নাতুল বিশ্বাস, লোহাগড়া

‘জনতার মুখোমুখি, জনতার সেবক’ এ স্লোগান সামনে নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা তার নির্বাচনী এলাকায় জনতার মুখোমুখি হাজির হয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কোটাকোল ইউনিয়নের কোটাকোল লঞ্চঘাট মাদ্রাসা মাঠে এ ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এমপি মাশরাফিকে উন্নয়ন সম্পর্কিতসহ দীর্ঘ ৪ বছরে কার্যক্রম, সফলতা-ব্যর্থতা, সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করেন।

এমপি মাশরাফি বিভিন্ন প্রশ্নর উত্তরে বলেন, করোনার কারণে দুই বছর কোন কাজ কারা সম্ভব হয়নি, আপনারাও ঘর থেকে বের হতে পারেননি। অনেকেই না জেনে প্রশ্ন করেছেন। বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও বরাদ্দের লিস্ট নিয়ে মিলিয়ে দেখুন। তিনি ইউনিয়নের কোন কোন রাস্তার বরাদ্দ দিয়েছেন, কোন কোন মসজিদ ও মন্দিরে কত টাকা বরাদ্ধ দিয়েছেন সে বিষয়ে বলেন, এর মধ্যেও অনেক রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন বাকী আছে, সেগুলো আস্তে আস্তে করা হবে বলে জানান।

তিনি বলেন, এর আগে অনেকেই আপনাদের মাথায় হাত বুলিয়ে খুশি করে থাকতে পারে। কিন্তু আমি তা করতে চাই না। আমি এসেছি আপনাদের কথা শুনতে। আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছেন। এখনো নির্বাচনের এক বছর বাকি আছে। আগামীতে হয়তো আমি নাও থাকতে পারি। সেজন্য একবছর আগে এসেছি যেসব কাজ করেছি, আর যা বাকি আছে তার হিসাব দিতে।

মাশরাফি বলেন, আপনাদের ইউনিয়ন নদী ভাঙনপ্রবণ এলাকা, আমার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল আপনাদের ঘর বাড়ি, জমি বাঁচানো। হয়তো একটু হলেও পেরেছি। আপনারা হয়তো অনেকে দেখেছেন মন্ত্রণালয়ের নদী ভাঙন জেলার তালিকায় নড়াইলের নাম ছিল না। মন্ত্রণালয়ের ধারণাই ছিল না নড়াইলে নদী ভাঙন হয়। অথচ গ্রামের পর গ্রাম, বাড়ির পর বাড়ি, ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আমাকে ভোট দিয়ে আপনারা নির্বাচিত করার পর কলম দিয়ে লিখে নদী ভাঙন জেলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছি। আপনাদের ইউনিয়নে সড়কের কাজ কম হয়েছে এটা আমি স্বীকার করি। তবে অন্য ইউনিয়নের তুলনায় আপনাদের ইউনিয়নে সরকারের ব্যয় কিন্তু বেশি হয়েছে। এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে বেড়িবাঁধ তৈরি এবং নদী ভাঙনরোধে দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, অর্থ দিয়ে আপনারা কোনো কাজ করাতে যাবেন না। বিশ্বাস করেন যারা আপনাদের থেকে টাকা নেয় তারা কাজ করে দিতে পারবে না। কারণ সরকারি কিছু নিয়ম আছে। যেটা সে চাইলেও ওভারটেক করতে পারবে না। যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজ রাতারাতি সম্ভব না, আপনারা (জনগণ) নিজেদের জায়গা থেকে সবাই এগিয়ে এলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি সমাজ হবে শান্তিপূর্ণ আবাসস্থল।

লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে শরফুল আলম লিটুর সঞ্চালনায় লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজগর আলী, লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সৈয়দ মশিউর রহমান, কোটাকোল ইউপি চেয়ারম্যান হাসান আল মাহমুদ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। জানা গেছে, সংসদ সদস্য মাশরাফি তার নির্বাচনী আসনের ২০টি ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে জনতার মুখোমুখি হবেন। প্রসঙ্গত, ব্যতিক্রমী এ ধরনের আয়োজন নড়াইলের কোনো জনপ্রতিধি কখনও করেননি।

সাহস২৪.কম/এএম.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত