শারীরিক সম্পর্কের পর শ্বাসরোধে হত্যা, আটক ২

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২২, ১৭:৪২

শেখ নাদীর শাহ্, খুলনা

মাত্র ৫ দিনের পরিচয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় এক নারীর। পরে লাশ গুমের জন্য বটি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলে আবু বক্কর। ওই ঘটনায় নিজেকে আড়াল করতে আবু বক্কার কথিত স্ত্রী স্বপ্না বেগমকে নিয়ে রওনা হয় ঢাকার উদ্দেশে। গ্রেপ্তার ভয়ে তারা অবস্থান নেয় গাজীপুর গিয়ে। সর্বশেষ ঘটনার পর রবিবার (০৬ নভেম্বর) রাতেই র‌্যাবের গোয়েন্দা জালে গ্রেপ্তার হয় আবু বক্কর। একইসঙ্গে আটক করা হয় তার কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে।

সর্বশেষ র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডের বিবরণ জানায় আবু বক্কর। পরে তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক নগরীর গোবরচাকা এলাকার একটি সরু স্থান থেকে ওই নারীর লাশের বিছিন্ন হওয়া দু হাতের কবজি উদ্ধার করে র‌্যাব। উদ্ধার হওয়া ওই নারী সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার কুতের বিল এলাকার জনৈক কালিপদ বাছাড়ের মেয়ে কবিতা রানী (২৯)।

সোমবার (০৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৬ এর মূখপাত্র লে: কর্ণেল মোসতাক আহমদ সাংবাদিকদের এ র লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া আবু বক্কর তার কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে নিয়ে ১ নম্বর গোবরচাকা ক্রসরোড জনৈক রাজুর বাড়িতে প্রায় ৩ বছর যাবত বসবাস করছে। স্বপ্না তার বিবাহিত স্ত্রী নন। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাড়িতে তারা বসবাস করছে। স্বপ্না নগরীর প্রিন্স হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

এদিকে মাত্র ৫ দিন পূর্বে কবিতা রানী ও আবু বক্করের মধ্যে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রে তাদের মধ্যে একাধিকবার কথা হয়েছে। এক সময়ে আসামি বক্কর কবিতা রানীকে তার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসে। ওই রাতেই তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় আসামি বক্কর কবিতাকে গলা নামিয়ে কথা বলার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু কবিতা সেটি না করে আরও উচু স্বরে কথা বলতে থাকে। উপায়োন্তু না পেয়ে আবু বক্কর তাকে শ্বাসরোধ করার জন্য নাক ও মুখ চেপে ধরে। পরে নিস্তেজ হয়ে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশটি গুম করতে রান্নাঘর থেকে বটি এনে মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে। এরপর মাথা পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে রাখে। পরে দু হাতের কবজি কেটে ফেলে ও দেহের বাকি অংশ একটি বক্সে ঢুকিয়ে রাখে।

এরপর ওই রাতেই নিজেকে গোপন করতে আবু বক্কর তার কথিত স্ত্রী স্বপ্নাকে নিয়ে রূপসা নদী পার হয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। সে সময়ে আসামি স্বপ্নাকে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোন কথা জানায়নি। সর্বশেষ গ্রেপ্তার হওয়া আসামিকে সোনাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত