লক্ষ্মীপুরে শিশুকে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ

প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২২, ১২:৩৯

লক্ষ্মীপুরে ঘুম থেকে ডেকে এনে চুরির অপবাদে হাত পা বেঁধে দিনভর নির্যাতন এবং সিগারেটের আগুন দিয়ে জাকির হোসেন নামের এক কিশোরের হাত ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সদর উপজেলার চর রমনী ইউপির ৮ নং ওয়ার্ড পূর্ব চর রমনী গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনায় শিশুর বাবা আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী (সদর) আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর মডলে থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মঞ্জুর আহমেদ তিতু।

আসামিরা হলেন, সদর উপজেলার চররমনী ইউনিয়নের চররমনী গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের ছেলে গোরফান ও তার ছেলে দেলোয়ার হোসেন, বাদশা মিয়ার ছেলে মনির হোসেন, আবুল কালাম ফরাজির ছেলে মনির, কালাম ভূঁইয়ার ছেলে মাকছুদ আলম ও মৃত মজিবুল হকের ছেলে শাহ আলম। ভুক্তভোগী শিশু জাকির একই ইউনিয়নের মধ্য চররমনী মোহন গ্রামের বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, কিশোর জাকির পেশায় জেলে অভিযানে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় সে পার্শবর্তী শাহ আলমের বাড়িতে বাড়িতে গাছ থেকে  নারিকেল পাড়তে যায়। নারিকেল পাড়া শেষে জাকির চলে আসতে চাইলেও তাকে শাহ আলমের স্ত্রী শাহিনুর আসতে না দিয়ে অন্যান্য কাজ করতে বলে। সকল কাজ শেষ হলেও ভাত খাওয়ানোর জন্য তাকে অপেক্ষা করতে বলে। ভাত খাওয়া শেষে জাকির ৪টি নারিকেল নিয়ে বাড়িতে চলে যায়।

পরদিন ভোররাতে দেলোয়ার ও মনির  শিশু জাকিরকে ঘুম থেকে ডেকে শাহ আলমের বাড়িতে নিয়ে যায় এক পর্যায়ে দেলোয়ার, গোরফান, মনির হোসেন, মনির, মাকছুদ ও শাহ আলম শিশুটির হাত পা বেঁধে মারধর শুরু করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে সুই দিয়ে আঘাত করে প্লাস দিয়ে শরীরের চামড়া টেনে ধরে এবং জ্বলন্ত সিগারেটের আগুন দিয়ে তার হাতে বিভিন্ন অংশে ঝলসে দিয়ে চুরি করেছে মর্মে স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা করে।

শিশু জাকিরের বাবা আলমগীর হোসেন জানান, নির্যাতনের পর চিকিৎসা ছাড়াই ৪ দিন বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছে তারা। এখন মামলা করায় আমাদের প্রাণে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি আমার ছেলের হাতের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে গেছে আসামিরা। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।

এদিকে অভিযুক্ত মনির গোরফান শাহ আলম নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে বলেন, নারিকেল পাড়তে এসে জাকির আমাদের ভাতের সাথে নেশা জাতীয় কিছু মিশিয়ে দিয়েছে। ভাত খাওয়ার পর সবাই ঘুমিয়ে যায় তখন সে ঘর থেকে স্বর্ণালংকার এবং নগদ মিলিয়ে প্রায় ৭ লক্ষ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। তাই তাকে বাড়িতে এনে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন জানান, আদালত থেকে মামলাটি তদন্তের জন্য থানায় দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সঠিক তদন্ত শেষে পুনরায় আদালতে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত