পঞ্চগড়ে পুলিশের চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ, পুলিশ সদস্য ক্লোজড

প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২২, ১৮:৫৪

ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড়

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় পুলিশের চাকরি দেওয়াসহ সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় অভিযোগ উঠেছে তেঁতুলিয়া হাইওয়ে পুলিশের গাড়ি চালক কনস্টেবল জুয়েল খন্দকারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিভাগীয় ভাবে তাকে ক্লোজড করা হয়েছে। অভিযুক্ত কনস্টেবলকে বর্তমানে আটক রেখে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম খান।

এদিকে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে হাইওয়ে পুলিশের রংপুর সার্কেল এসপি জাহিদ চৌধুরী গত বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানা পরিদর্শন করেছেন। এবং  অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের জবানবন্দী নিয়েছেন।

জানা যায়, গাড়ি চালক কনস্টেবল জুয়েল খন্দকার থানার পরিচ্ছন্ন কর্মী ভজনপুর ইউনিয়নের ভদ্রেশ্বর গ্রামের নাজিরকে পুলিশে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখায়। এর মাঝে হাইওয়ে থানার পরিচ্ছন্ন কর্মী নাজিরের কাছ থেকে ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দীর্ঘদিন অতিবাহীত হয়ে গেলেও গাড়ি চালক কনস্টেবল জুয়েল খন্দকারের কোন হদিস না থাকায় থানায় অবহিত করে হাইওয়ে পুলিশের বগুড়া রিজিয়নের এসপি বরাবর অভিযোগ করেছে পরিচ্ছন্ন কর্মী নাজির। এদিকে অভিযোগের পর জুয়েলকে বগুড়া এসপি অফিসে ক্লোজড করার পর রংপুর সার্কেল অফিসে রাখায় হয়েছে।

অভিযোগকারী পরিচ্ছন্ন কর্মী নাজির বলেন, গাড়ি চালক জুয়েল খন্দকার প্রায় সময় পুলিশের চাকরি নিয়ে দিবে বলে আমাকে বলে আসতো। বিষয়টি তেমন ভাবে কান দেইনি। হঠাৎ আরেকদিন বলে তার পঞ্চগড় পুলিশ সুপারসহ উপরের সবার সাথে ভালো সম্পর্ক। বিভিন্ন ভাবে লোভ দেখিয়ে কাগজপত্র চেয়ে ৭০ হাজার টাকা প্রথমে নেয়। এ ভাবে পর্যায়ক্রমে আমি তাকে ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দেই। একসময় সে চাকরি হয়েছে বলে ঢাকায় নিয়ে মাঝ রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায়। তারপর আর কোন চাকরির খবর না থাকায় আমি অভিযোগ করি।

খবর নিয়ে জানা যায়, পুলিশে চাকরি দেওয়ার নামে থানায় কর্মরত বাবুর্চি বিলকিস বেগমের কাছে ১৮ হাজার টাকা, সরকারি রেশন দেওয়ার নামে ভজনপুর বাজারের সেলুন ব্যবসায়ী সুবলের কাছ থেকে ২৫ হাজার ২০০ টাকা, মোবাইল ব্যবসায়ী জিয়ার কাছ থেকে বাবার অসুস্থতার কথা বলে ১০ হাজার ২০০ টাকা, শালবাহান রোডের এক বাঁশ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ লাখ টাকাসহ আরও বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জুয়েল খন্দকারের বিরুদ্ধে।

তেঁতুলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, গাড়ি চালক জুয়েল খন্দকারকে বগুড়া এসপি অফিসে ক্লোজড করে রংপুর সার্কেল অফিসে রাখা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে রংপুর সার্কেল এসপি তদন্ত করছেন। অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের জবানবন্দী নিচ্ছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সকল প্রসেসিং-এর মাধ্যমে তার চাকরিও চলে যাবে। টাকা ফেরতের বিষয়টি এসপি স্যার বলতে পারবেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, বিভাগীয় ভাবে মামলা হবে। এদিকে পরিচ্ছন্ন কর্মী নাজির ১১ লাখ ৯৩ হাজার টাকার কথা বললেও জুয়েল খন্দকার ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা কথা বলেছে। এখন পর্যন্ত একটি অভিযোগই করা হয়েছে এবং সেটি তদন্তে রয়েছে।

এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের রংপুর সার্কেল এসপি জাহিদ চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগ পাওয়া পর তদন্ত চলছে। বর্তমানে অভিযুক্ত ক্লোজড রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত