বাতিল হচ্ছে পায়রা এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্প

প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২২, ১২:০৪

সাহস ডেস্ক

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় ২০১৭ সালে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসভিত্তিক (এলএনজি) পায়রা ৩৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট করে তিনটি পর্যায়ে মোট ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। জমি বরাদ্দ ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজও শেষ হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বেশ বেড়ে যাওয়ায় এ প্রকল্প থেকে সরে আসছে সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, এলএনজি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে ২৮ থেকে ২৯ টাকা খরচ পড়বে। তাই এই প্রকল্প নিয়ে এখন আর চিন্তা করছে না সরকার।

বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ওই বছর জার্মানিভিত্তিক বহুজাতিক কোম্পানি সিমেন্স এজির সঙ্গে চুক্তি করে নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড (নওপাজেকো)। পরে ২০২০ সালে একটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি এবং বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগকারী চীনের সিএমসির সঙ্গে আরেকটি বহুপক্ষীয় চুক্তির খসড়া তৈরি হয়। চুক্তিটি না করার অনুরোধ জানিয়ে নওপাজেকো গত মাসে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি বিদ্যুৎ বিভাগ।

চিঠিতে নওপাজেকো বলেছে, সরকার ইতিমধ্যে পায়রা উপকূলে গভীর সমুদ্রে একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আলাদা টার্মিনাল নির্মাণের দরকার নেই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এলএনজি সরবরাহে বহুপক্ষীয় চুক্তির কিছু ধারা আর প্রাসঙ্গিক নয়। এ অবস্থায় বহুপক্ষীয় চুক্তিটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নওপাজেকো বোর্ড। নওপাজেকো বলছে, আপাতত প্রথম পর্যায়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা যেতে পারে। ভবিষ্যতে বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে বাকি দুটি ইউনিট করা যেতে পারে। নওপাজেকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এম খোরশেদুল আলম জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্যাস পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করা যাবে। বিদ্যুৎ প্রকল্পে যারা কাজ করার কথা ছিল, তারাও কোনো আপত্তি জানায়নি। তাই বিদ্যুৎ বিভাগে বহুপক্ষীয় চুক্তিটি না করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জানান, এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরকারের সরে আসার সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। এখন সেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মিলে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করা যেতে পারে। পরিকল্পনায় থাকা অন্যান্য এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাদ দিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিদ্যুৎকেন্দ্র করা উচিত। এতে এলএনজি আমদানি করতে হবে না এবং বৈদেশিক মুদ্রার ওপর দীর্ঘমেয়াদি চাপ কমবে।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত