বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম কমলে সমন্বয় করবে সরকার: তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২২, ১৭:২৭

নিজস্ব প্রতিবেদক
ছবি : ড. হাছান মাহমুদ।

বিশ্ববাজার যখন স্থিতিশীল হবে তখন নিশ্চয় সরকার জ্বালানির দাম সমন্বয় করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমবার (৮ আগস্ট) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শহীদ শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ও সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের অর্থনীতিতে এত ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়, গত তিন মাসে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। তখন সরকার দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। বিশ্ববাজারে দাম কমে আসলে তার প্রভাব আমাদের দেশে পড়তে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগে। তখন আমাদের দেশে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি সংকটের জন্য ইউরোপের সবচাইতে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হচ্ছে জার্মানি। সেখানে জ্বালানি সংকটের জন্য সাশ্রয়ী উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যুতে রেশনিং করা হচ্ছে। ফ্রান্সেও জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য নানা বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে। বিধিনিষেধের ব্যত্যয় ঘটলে ৭৫০ ইউরো জরিমানা ঘোষণা করেছে।

তিনি বলেন, আমি জানি এ বিষয়টি নিয়ে অনেক রাজনৈতিক দল মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে। তাদের অনুরোধ জানাবো বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকাতে। সরকার যে গত বছর ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। এ বছরও কি ৫৩ হাজার কোটি টাকা বা বিপিসির পক্ষে প্রতিদিন ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব? সেটি কোনো দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। সেটি সম্ভব নয় বিধায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপের অনেক শক্তিশালী দেশ ও জাপানও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী নীতি নিয়ে চলছে। সংকটময় পরিস্থিতির জন্যই বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে দাম কমলে তার প্রভাব আমাদের দেশে পড়তে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগে। তখন আমাদের দেশে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হবে।

একলাফে একদিনে এত টাকা বাড়ানো হলো এটা মানুষের জন্য বোঝা কি না ও ইউরোপ আমেরিকার মতো দেশের সঙ্গে তুলনা করা কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য আপনাদের সামনে ডাটা তুলে ধরেছি। আর আমাদের পরিস্থিতি আশপাশের দেশগুলোর সঙ্গে তুলনীয়। ভারতের অর্থনীতি আমাদের থেকে অনেক বেশি শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে। যদিও মাথাপিছু আয়ে তাদের আমরা ছাড়িয়ে গেছি। ভারতে জ্বালানি তেলের যে মূল্য আমাদের দেশেও একই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নেপালসহ অন্যান্য দেশে মূল্য কিন্তু আরও অনেক বেশি।

এছাড়া তেলের দাম আরও আগেই বাড়ানো উচিত ছিল। তাহলে আমাদের এত ভর্তুকি দিতে হতো না। হঠাৎ করে বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে মানুষ একটু হতচকিত হয়ে গেছে। এটা আমি জানি বা বুঝি। তবে বিশ্ব প্রেক্ষাপটে মূল্য সমন্বয় না করে উপায় ছিল না।

বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বাজারে দাম বেড়ে যায়, আর দাম কমলে সেটা দুই মাস পরে প্রভাব পড়ে এটা কি আপনার কাছে মনে হয় না ব্যালেন্সে বৈষম্য হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, এটা একটা বাস্তবসম্মত পদ্ধতি। যখন বিশ্ব বাজারে দাম কমে তখন এর প্রভাব পড়তে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগে। এজন্য যে দাম কমলে আজই বাংলাদেশে চলে আসে না। আসতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই মাস। বিশ্ব বাজারে দাম বাড়ার সাথে সাথে আমাদের দেশে দাম বাড়ে এটা ঠিক নয়।

দেড় দুই মাস পরে কি দাম কমবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বিশ্ব বাজারে কখন বাড়ে, গত এক বছরের চিত্র যদি দেখেন- একবার কমে আবার বাড়ে। এ রকম একটা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে। কোভিডের পর ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের জন্য দাম ওঠানামা করছে। বিশ্ব বাজার যখন স্থিতিশীল হবে ও দাম কমবে তখন নিশ্চয় সরকার মূল্য সমন্বয় করবে।

সাহস২৪.কম/এসএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত