রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন’ করছে আমেরিকা: শেখ হাসিনা

প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২২, ১৩:৫৪

সাহস ডেস্ক

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা দেওয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল’ বলে মন্তব্য করেছেন। বৃহস্পতিবার (০৭ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নবনির্মিত ৮ তলা অফিস ভবন উদ্বোধন এবং বঙ্গবন্ধু কূটনৈতিক উৎকর্ষ পদক প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে অর্থনৈতিকভাবে বিরাট ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে সারা বিশ্ব। ঠিক সেই সময়ে ইউক্রেন এবং রাশিয়া যুদ্ধ বাধে। বিশ্বব্যাপী মানুষের অবস্থা আরও করুণ হয়ে যাচ্ছে। মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার ওপর আমেরিকা যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ফলে পণ্য প্রাপ্তিতে বা আমদানিতে বিরাট বাধা আসছে বলে মনে করেন তিনি। শুধু বাধাই না, পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে। প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী পাওয়ার ক্ষেত্রটাও সংকুচিত হয়ে গেছে। শেখ হাসিনার মতে, এই প্রভাবটা শুধু বাংলাদেশ না- আমেরিকা, ইউরোপ থেকে শুরু করে বিশ্বব্যাপী পড়ছে।

তিনি বলেন, মানুষ কষ্ট ভোগ করছে। এটি আসলে সবার, অন্তত উন্নত দেশগুলোর বিশেষভাবে বিবেচনা করা উচিত। আমেরিকাকেই বিবেচনা করা উচিত তারা যে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছেন তাতে তাদের দেশের লোকও কষ্ট পাচ্ছেন। সেদিকেও তাদের দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে মনে করেন দেশনেত্রী। নিষেধাজ্ঞা যাদের বিরুদ্ধে দিচ্ছেন তাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাচ্ছে আমেরিকা। কিন্তু কতটুকু তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে? তার থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ হচ্ছে। সেই উন্নত দেশ, উন্নয়নশীল দেশ- সব দেশের মানুষই ভুগছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের সব দেশ কিন্তু কষ্ট পাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি থেকে কেবল একটু ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল পৃথিবী। তখনই এ যুদ্ধ আর নিষেধাজ্ঞা। এটা সত্যি সবার জন্য বিরাট একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কখনো কোনো দেশ বা জাতিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এর প্রভাব খোদ নিজেদের দেশের ওপরও পড়ে বলে মনে করেন শেখ হাসিনা। কাজেই এ নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া দরকার। যুদ্ধ যারা করার করতে থাক, কিন্তু পণ্য পরিবহন বা আমদানি-রপ্তানি সহজভাবে রাখার আহবান জানান তিনি। সাধারণ মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, খাদ্যটা মানুষের সব থেকে বড় চাহিদা। আর সেখানেই সমস্যায় পড়ে গেছে অনেক উন্নত দেশও।

তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশেরও অনেক লোক বসবাস করে। এমন অবস্থায় প্রত্যেকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার কী অর্থ থাকতে পারে, বলে বিশ্ববাসীর কাছে প্রশ্ন রাখেন তিনি। শেখ হাসিনার মতে, এমন ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। মানুষের যে অধিকার রয়েছে সে অধিকার থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়। “আমরা আশা করি যে একটি দেশকে শাস্তি দিতে যেয়ে বিশ্বের মানুষকে শাস্তি দেওয়া- এখান থেকে সরে আসাটাই বোধহয় বাঞ্ছনীয়। সবাই সেটাই চাইবে,” বলেন তিনি।

সাহস২৪.কম/এসটি/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত