ওষুধের কাঁচামালের আড়ালে পৌনে ৩ কোটি টাকার আফিম, আটক ২

প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২২, ১৮:২১

সাহস ডেস্ক

দশ বছরের মধ্যে আফিমের সবচেয়ে বড় চালান জব্দ করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। ওষুধের কাঁচামালের আড়ালে মাদকের চালান আসছে ঢাকায়, এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর পুরানা পল্টন ও বনশ্রী আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন কেজি আফিম জব্দ করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক পৌনে ৩ কোটি টাকা। শনিবার (২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক জাফরুল্লাহ কাজল।

জাফরুল্লাহ কাজল বলেন, বেশ কিছুদিন আগে আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আসে যে, ওষুধের কাঁচামাল হিসেবে আফিমের বড় চালান ঢাকায় এনে বাজারজাত করার চেষ্টা করছে একটি চক্র। এরপর আমরা গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করি ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করতে থাকি। ঢাকা মেট্রো (উত্তর) কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে এবং সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে ইন্সপেক্টর মো. শাহীনুল কবীরের টিম ক্রেতার ছদ্মবেশে রাজধানীর পল্টন মডেল থানার পুরানা পল্টন লেন (ভিআইপি রোড) থেকে দুই কেজি আফিমসহ মো. আবুল মোতালেব (৪৬) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বনশ্রী আবাসিক এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ভূঁইয়া (৪৪) নামে আরেকজনকে আরও এক কেজি আফিমসহ গ্রেপ্তার করা হয়। আটক হওয়া মাদক আফিম কি না, তা জানতে রাসায়নিক পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় নিশ্চিত হওয়া যায়, ওষুধের কাঁচামাল নয়, জব্দ করা চালানটি আসলে আফিমের।

আফিমের এ চালান কোন রুটে ও কীভাবে কারা নিয়ে আসছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে এ চালান বাংলাদেশে এসেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মাদকের হাব হচ্ছে আফগানিস্তান। আফগানিস্তান ছাড়াও পাকিস্তান ও ইরানে এর চাষাবাদ হয়ে থাকে। কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে, আফগানিস্তান থেকেই এ আফিমের সরবরাহ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত আফিমের চালানটি ফেনী থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। গ্রেপ্তাররা আফিম নতুন করে ঢাকায় সরবরাহের চেষ্টা করে আসছিল।

তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ (সংশোধিত ২০২০) মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া আফিম চোরাচালানের সঙ্গে আরও দুজনের নাম আমরা পেয়েছি, যা তদন্তের স্বার্থে এখনই প্রকাশ করা যাচ্ছে না। গ্রেপ্তারদের রিমান্ডে এনে আফিমের উৎস এবং গন্তব্য কোথায় ছিল সে বিষয়ে নিশ্চিত করে বলা যাবে। প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই নেটওয়ার্কের সব সদস্যকেই তদন্তপূর্বক আইনের আওতায় আনা হবে।

গ্রেপ্তার হওয়া মো. আবুল মোতালেবের বাড়ি নোয়াখালীতে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত জনশক্তি ব্যবসায় জড়িত। অন্যজন জাহাঙ্গীর সিদ্দিক ভূঁইয়া। তার বাড়ি জামালপুরে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত একটি বেসরকারি গ্রুপ অব কোম্পানির প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। তবে এসবের আড়ালে তারা মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

সাহস২৪.কম/এএম/এসকে.

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত