নারায়ণগঞ্জ: রিয়াজ বাহিনীর ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রকাশ : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ২০:৪৬

সাহস ডেস্ক

ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন 'সন্ত্রাসী' কার্যক্রম চালানোর অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় সন্ত্রাসী দল রিয়াজ বাহিনীর প্রধান রিয়াজুল ইসলাম টিপু ওরফে শুটার রিয়াজসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁও থেকে বুধবার (৬ এপ্রিল) রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গ্রেপ্তাররা হলেন- রিয়াজুল ইসলাম টিপু ওরফে রিয়াজ (২২), মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে কালা ভাগিনা (২৩), মারুফ হোসেন মুন্না (২৩), মো. সেলিম (২৩) ও মো. মাহবুব মিয়া (২৩)।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) কারওয়ানবাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেপ্তাররা 'পেশাদার খুনি ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী শুটার রিয়াজের নেতৃত্বে' নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ, সোনারগাঁও ও তার আশপাশের এলাকায় 'সন্ত্রাসী কার্যকলাপ' চালিয়ে আসছিল।

কমান্ডার মঈন বলেন, ২৯ মার্চ রূপগঞ্জ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে ঘটনা ঘটে প্রকাশ্যে হামলা ও গুলিবর্ষণের। এতে একজন গুলিবিদ্ধ ও আহত হন ২০ জন। তখন এলাকায় ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়।

তিনি বলেন, ২০১৬ সালে সোনারগাঁওয়ের একটি স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় বড় ভাই মোহাম্মদ আলীর মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হন রিয়াজ। পরে রূপগঞ্জ ও সোনারগাঁও এলাকায় চাঁদাবাজি, ভূমি দখল ও ভাড়ায় মারামারি করতে গিয়ে ‘স্থানীয় এক ব্যক্তির মাধ্যমে’ অপরাধ জগতের লোকজনের সাথে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে।

এ র‍্যাব সদস্য বলেন, একপর্যায়ে ওই ব্যক্তির সঙ্গে মনোমালিন্য হলে সে নিজেই একটি সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলে এবং তার সহযোগীদেরকে অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ শুরু করে। তিনি জানান, ‘রিয়াজের বড় ভাইও সন্ত্রাসী কাজে যুক্ত এবং আত্মগোপনে রয়েছেন। রিয়াজের বিরুদ্ধে হত্যা, মারামারি, বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় ১৫টি মামলা ও বেশ কয়েকটি জিডি রয়েছে। একাধিকবার তিনি গ্রেপ্তারও হয়েছেন।’

চলতি বছরের ১৫ মার্চ রূপগঞ্জ এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শফিক ও শামীম মল্লিক নামে দুই ব্যক্তিকে তাদের বাসার সামনে এলোপাতাড়ি গুলি করা হয়। তার আগে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রূপগঞ্জ এলাকায় বাড়িতে ঢুকে বিদ্যুৎ নামে একজনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়। সেসময় একটি মেয়ের চোখে গুলি লেগে তার চোখ নষ্ট হয়ে যায়। একই বছরের ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গুলিতে একজন নিহত হয়।

তিনি বলেন, এই ঘটনাগুলো পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঘটনাগুলো এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, অবৈধ জমি দখলকে কেন্দ্র করে রিয়াজ বাহিনীর প্রধান রিয়াজের নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে স্বীকার করেছে। ওই সন্ত্রাসী দলে সদস্য সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ জন বলে জানান তিনি। আরও জানান, ‘তারা অস্ত্র নিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিল রিয়াজের নেতৃত্বে।’

কমান্ডার মঈন আরও বলেন, "রিয়াজের নেতৃত্বে তারা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজি, মার্কেট ও বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, অপহরণ ও মাদক ব্যবসা করত"।

রিয়াজের নেতৃত্বেই এলাকায় বালু ভরাট ও মাটি কাটার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা হত এবং ট্রাক থেকে চাঁদা আদায় করা হত বলেও জানা যায়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তারের সময় তিনটি বিদেশি পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি, পাঁচটি ধারাল দেশীয় অস্ত্র, একটি মোটরসাইকেল ও ৬০০ ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত