প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ প্রণোদনা

নিম্নআয়ের মানুষেরা পাবে ৩,২০০ কোটি টাকা

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২১, ১৭:২৪

সাহস ডেস্ক
নিম্নআয়ের মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ প্রণোদনা

করোনার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বিপদের মুখোমুখী শ্রমিক-দিনমজুর তথা নিম্ন আয়ের মানুষেরা। চলমান সংক্রমণের কারণে আরোপিত বিধিনিষেধের ফলে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা। কাজ নেই, জমানো সম্পদ নেই এমন অবস্থায় না খেয়ে মরা ছাড়া অন্য কোনও পথ খোলাও নেই তাদের। দেশের সাধারণ মানুষের এই অবস্থায় সরকারের জরুরি বিশেষ সহায়তা ছাড়া এই সংকট নিরসণের কোনও উপায়ও নেই।

এমন অবস্থায় সংকট নিরসণের লক্ষ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের সহায়তায় ৩ হাজার দুশ কোটি টাকার পাঁচটি নতুন প্রণোদনা প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন পাঁচটি প্রণোদনার মাধ্যমে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা দেয়া হবে ক্ষতিগ্রস্তদের। তবে ভুক্তভোগী পর্যন্ত এ সুযোগ ঠিক ঠাক পৌছাবে কি না সেটাই এখন চিন্তার বিষয় বলে মনে করছেন অনেকেই।

দীর্ঘদিন ধরেই দল এবং কাঠামোর ভেতর সুদ্ধি অভিযানের ব্যপক প্রয়াস চালাচ্ছে সরকার। গত বছরেও ত্রাণ এবং প্রণোদনার লুটপাটের জন্য দলীয় এবং সরকারি কর্মকর্তা অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা গেছে। এ যাত্রায় যদি দূর্নীতি ও চুরির মত ঘটনা না ঘটে তবে এই প্রণোদনা প্যাকেজগুলোতে ব্যপক আশার সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। 

মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) এই আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা দেন বলে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নতুন পাঁচটি প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে- ক. দিনমজুর, পরিবহন শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং নৌপরিবহন শ্রমিকদের জন্য জনপ্রতি নগদ আড়াই হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তার জন্য ৪৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ। / খ. শহর এলাকার নিম্নআয়ের জনসাধারণের সহায়তার লক্ষ্যে ২৫ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ দিন ৮১৩টি কেন্দ্রে বিশেষ ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বরাদ্দ ১৫০ কোটি টাকা। / গ. ৩৩৩-নম্বরে জনসাধারণের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে বিশেষ বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা। / ঘ. গ্রামীণ এলাকার কর্মসৃজনমূলক কার্যক্রমে অর্থায়নের জন্য পল্লী সংস্থান ব্যাংক ও পিকেএসএফ-এর মাধ্যমে ঋণ সহায়তা দিতে (৪ শতাংশ সুদে) এর আগে বরাদ্দ ৩ হাজার ২শ কোটি টাকার অতিরিক্ত বরাদ্দ এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা। / ঙ. পর্যটনখাতের হোটেল মোটেল, থিম পার্কের জন্য কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধের লক্ষ্যে ব্যাংকের মাধ্যমে ৪ শতাংশ সুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ সহায়তা দিতে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ।

ছবি: নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রণোদনার প্রস্তাবনা

 

প্রথম প্যাকেজ
দিনমজুর, পরিবহনশ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও নৌপরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৪৭০ জন বিপরীতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা। ১৪ লাখ ৩৭ হাজার ৩৮৯ জন দিনমজুর, ২ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫০ হাজার ৪৪৫ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং ১ হাজার ৬০৩ জন নৌ-পরিবহন শ্রমিকপ্রতি নগদ দেয়া হবে দুই হাজার ৫০০ টাকা করে।

দ্বিতীয় প্যাকেজ
এর আওতায় সারা দেশে ৮১৩টি কেন্দ্রে বিশেষ ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৫০ কোটি টাকা। শহর এলাকায় নিম্ন আয়ের জনসাধারণকে সহায়তায় আগামী ২৫ জুলাই থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত ১৪ দিন এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এ কার্যক্রমের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল ও ১৪ হাজার মেট্রিক টন আটা।

তৃতীয় প্যাকেজ
জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অনুকূলে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে এই প্যাকেজে। মূলত ৩৩৩ নম্বরে কল করে জনসাধারণের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্যই এ প্যাকেজ। এতে মোট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০০ কোটি টাকা।

চতুর্থ প্যাকেজ
গ্রামীণ এলাকায় কর্মসৃজনমূলক কার্যক্রমে অর্থায়নের জন্য পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও পিকেএসএফের মাধ্যমে চার শতাংশ সুদে ঋণ সহায়তা দেয়ার জন্য আরও ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এই প্যাকেজে। এর আগেও এ খাতে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

পঞ্চম প্যাকেজে
পর্যটন খাতের অনুকূলে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার কোটি টাকা। এর আওতায় পর্যটন খাতের হোটেল, মোটেল, থিম পার্কের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ব্যাংক ব্যবস্থার মাধ্যমে ৪ শতাংশ সুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ঋণ সহায়তা দেয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আরোপিত বিধিনিষেধের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের মানুষের সহায়তায় এ প্যাকেজগুলো ঘোষণা করা হয়েছে।

সাহস২৪.কম/সজিব তুষার

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত