মাদক মামলায় নাসির-অমিসহ পাঁচ জন রিমান্ডে

প্রকাশ : ১৫ জুন ২০২১, ১৮:৫৮

সাহস ডেস্ক

অভিনেত্রী পরীমণিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ পাঁচ জনকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। অপর তিন আসামি হলেন- লিপি আক্তার (১৮), সুমি আক্তার (১৯) ও নাজমা আমিন স্নিগ্ধা (২৪)।

মঙ্গলবার (১৫ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসির আদালত এ রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা-১ নম্বর সেক্টরের-১২ নম্বর রোডের বাসা থেকে ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এর আগে সাভার থানায় নির্যাতন ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ অজ্ঞাত চার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নায়িকা পরীমণি। সোমবার দুপুরে পরীমণি নিজে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে পরীমণি বলেন, গত ৮ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার বনানীর বাসা থেকে কস্টিউম ডিজাইনার জিমি (৩০), অমি (৪০) ও বনিসহ (২০) দুটি গাড়িযোগে উত্তরার উদ্দেশে রওনা হই। পথে অমি বেড়িবাঁধস্থ ঢাকা বোট ক্লাবে তার দুই মিনিটের কাজ আছে বলে জানায়। অমির কথামতো সবাই রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে গিয়ে গাড়ি দাঁড় করাই। কিন্তু বোট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অমি কোনও এক ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে কথা বলে। তখন ঢাকা বোট ক্লাবের সিকিউরিটি গার্ডরা গেট খুলে দেয়। পরে আমার ছোট বোন বনি প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে বোট ক্লাবে প্রবেশ করে ও বারের কাছের টয়লেট ব্যবহার করি। টয়লেট হতে বের হতেই এক নম্বর বিবাদী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাদের ডেকে বারের ভেতরে বসার অনুরোধ করেন এবং কফি খাওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইলে অমিসহ এক নম্বর আসামি মদপানের জন্য জোর করেন। আমি মদপান করতে না চাইলে এক নম্বর আসামি জোর করে আমার মুখে মদের বোতল প্রবেশ করিয়ে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করে। এতে আমার সামনের দাঁতে ও ঠোঁটে আঘাত পাই।

এজাহারে তিনি আরও বলেন, ১নং আসামি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে ও আমাকে জোর করে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ১নং আসামি উত্তেজিত হয়ে টেবিলে রাখা গ্লাস ও মদের বোতল ভাঙচুর করে আমার গায়ে ছুড়ে মারেন। তখন আমার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি ১নং আসামিকে বাধা দিতে চাইলে তাকেও মারধর করে নীলাফোলা জখম করে। আমি প্রথমে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল দিতে গেলে আমার ব্যবহৃত ফোনটি টান মেরে ফেলে দেয়। পুনরায় ফোনটি উঠিয়ে কল দিতে চাইলে আবারও ফোনটি টেনে ফেলে দেয়।

পরীমণি বলেন, ২নং আসামি (অমি) সহ অজ্ঞাতনামা চারজন আসামি ১নং আসামিকে ঘটনা ঘটাতে সহায়তা করে। আমি অজ্ঞাতনামা আসামিদের দেখলে শনাক্ত করতে পারব। প্রকাশ থাকে যে, ২নং আসামি অমি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাকে আমার বর্তমান বাসা থেকে ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে যায় এবং ২নং আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৪ জন আসামির সহায়তায় ১নং আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করে এবং জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

‘আমার সঙ্গীদের সহায়তায় ধর্ষকের হাত থেকে রক্ষা পাই। রাত অনুমান ৩টায় আমি আমার গাড়িযোগে প্রায় অচেতন অবস্থায় আমার সঙ্গীদের সঙ্গে ফিরে আসি। উল্লেখ্য যে, আসামিরা বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে বিভিন্ন প্রকার ভীতি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে আমি আমার পরিবার, শিল্পী সমিতি ও অন্যান্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এই এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হলো।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত