রোজিনাকে হয়রানির ঘটনায় মামলা করবে ডিআরইউ

প্রকাশ | ২১ মে ২০২১, ১৪:৪১ | আপডেট: ২১ মে ২০২১, ১৫:০৪

অনলাইন ডেস্ক

রোজিনা ইসলামকে হয়রানি ও নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে প্রথম আলো কিংবা তার পরিবার মামলা না করলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান।

শুক্রবার (২১ মে) দুপুরে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নির্যাতন ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় ডিআরইউ কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

পাশাপাশি এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচনের জন্য ডিআরইউয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হবে। মামলার শিকার রোজিনা ইসলামের মুক্তির আন্দোলন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো বৈঠকে বসছে শনিবার (২২ মে)।

সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ ও নাগরিক টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক আজাদ বলেন, আমি সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন করতে চাই। বিশেষ করে সরকারের চারজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বলেছেন রোজিনা ইসলাম যেন ন্যায় বিচার পান, তারা তা দেখবেন। কিন্তু আমি তাদের কার্যক্রম নিয়ে সন্দিহান। কেননা জামিন যোগ্য মামলায় একটি মামলা হলো, অথচ তাকে এতটা বেগ পেতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমি দাবি করেছিলাম একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করুন। নতুন একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে কিন্তু এটি অত্যন্ত হাস্যকর। কেননা যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের নিয়ে তদন্ত কমিটি। আমরা চাই এ কমিটিতে সাংবাদিকরা থাকবে, সরকারের অন্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা থাকবে, একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি হবে।

ডিআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, রোজিনা আপাকে হেনস্তা করা হয়েছে। এজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত। যদি পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা না হয়, তবে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।

মসিউর রহমান খান বলেন, রোজিনা আপার মামলার শুনানি হয়ে গেছে, আগামী রোববার জামিন বিষয়ে আদেশ দেবে। জামিন পেলেই আমাদের এ আন্দোলন থেমে যাবে না। আমরা আন্দোলন অব্যাহত রাখব। এই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং যারা রোজিনা ইসলামকে হয়রানি ও নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটির ব্যবস্থা না করে, সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে পৃথক কমিটি গঠন করা হবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে এই ঘটনার প্রকৃত রহস্য জনসম্মুখে প্রকাশ করব।

তিনি বলেন, অনেক নেতাই গত তিন দিনে এখানে ছিলেন, আজকে অনেকে নেই। সামনে হয়তো আরও অনেক নেতা আসবেন। আমি আপনাদের কাছে কথা দিচ্ছি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে যেই থাকুক, না-থাকুক, এই সংগঠনের ব্যানারে এই আন্দোলন চলছে, চলবে। এই ঘটনার যৌক্তিক সমাপ্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।

ডিআরইউতে সরকারের একজন উপমন্ত্রীকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা প্রসঙ্গে ডিআরইউ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা গতকাল একজন মন্ত্রীকে ডিআরইউতে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছি। সাংবাদিকদের সঙ্গে আমলারা অন্যায় আচরণ করেছেন, সাংবাদিকরা এখানে একটা পক্ষ দাঁড়িয়েছে, আমলারা রাষ্ট্রক্ষমতা অবৈধভাবে ব্যবহার করে সাংবাদিকদের ঘায়েল করার চেষ্টা করছেন। তিনি কি আমলাদেরই মন্ত্রী, সাংবাদিকদের মন্ত্রী নন? সাংবাদিকদের জন্য কি তাদের দায়বদ্ধতা নেই? তাই ডিআরইউয়ের অবস্থান অবশ্যই যৌক্তিক। কারণ ওই মন্ত্রী সাংবাদিকদের বিষোদগার করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

সমাবেশে আরও ১০ জনের অধিক সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে বক্তব্য রাখেন। তারা বলেছেন, রোজিনা ইসলামের সঙ্গে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যারা করেছে, তা অন্যায়। অবিলম্বে তারা রোজিনা ইসলামের মুক্তি চান, তার বিরুদ্ধে আনা মামলার প্রত্যাহার চান এবং এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।