কোয়ারেন্টিনে পুলিশের হাতে ধর্ষণের শিকার তরুণীর আত্মহত্যা চেষ্টা
প্রকাশ | ১৯ মে ২০২১, ১৪:২৫ | আপডেট: ১৯ মে ২০২১, ১৪:৪২
অনলাইন ডেস্ক
খুলনা পিটিআই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ধর্ষণের শিকার ভারত থেকে ফেরত সেই তরুণী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। ১৮ মে (মঙ্গলবার) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন নিজ রুমে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জানান জেলা প্রশাসক (ডিসি) হেলাল হোসেন। এ সময় কোয়ারেন্টিন সেন্টারে থাকা অন্যান্যরা এবং নারী পুলিশ সদস্যরা তাকে রক্ষা করেন। ওই নারীকে দেখভালের জন্য নারী পুলিশ সদস্য নিয়োজিত করা হয়েছে বলে জানান ডিসি।
খুলনা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই তরুণীকে পিটিআই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে নেয়া হয়। এর আগে, উক্ত তরুণী তাকে ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান। কিন্তু ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ না হওয়ায় এতে কেউ রাজি হয়নি। এরপর রাত প্রায় সাড়ে ৮টার দিকে তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে ওই সেন্টারে থাকা অন্যান্য নারী ও পুলিশের নারী সদস্যরা তাকে রক্ষা করে। এ ঘটনার পরবর্তীতে জেলা প্রশাসন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেন্টারে যায়।
খুলনা মেডিক্যালে থাকাকালীন ওই তরুণী বলেন, 'আমার দুটি সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় আমি সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি। আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা যেন অন্য কোনো নারীর সঙ্গে না হয়। আমি আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।'
খুলনা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক বার্তায় ১৭ মে (সোমবার) জানানো হয়, ভারত থেকে আসা খুলনায় কোয়ারেন্টিনে থাকা ওই তরুণীকে এএসআই মোকলেছুর রহমান ধর্ষণ করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ মিলেছে। এর পরপরই মোকলেছুরকে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।
মোকলেছুর খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি খুলনার পিটিআই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে গত ১ মে থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার বাড়ি যশোর সদরের দৌলদিহি এলাকায়।
গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো কেএমপি থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) মহিলা হোস্টেলে ভারতফেরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিলেন মোকলেছুর। ডিউটিতে থাকাকালে তিনি নিচতলা থেকে দ্বিতীয় তলায় কোয়ারেন্টিনে থাকা তরুণীর কক্ষে বিনা অনুমতিতে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন। শনিবার রাতে আবার কক্ষে ঢুকে ধর্ষণচেষ্টার সময় তরুণী চিৎকার করলে আসামি দ্রুত চলে যান। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাথমিক অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানে সত্যতা মিললে মোকলেছুরকে বরখাস্ত করা হয়।'
উল্লেখ্য, গত ১৪ মে রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় তাকে ধর্ষণ করেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মোকলেসুর রহমান। ঘটনার পর গতকাল ১৮ মে (মঙ্গলবার) খুলনা থানায় মামলা দায়েরের পর মোকলেসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।