ঈদ উদযাপন যেন সংক্রমণ বৃদ্ধির উপলক্ষ না হয়: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২১, ০৪:৪৩

সাহস ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেছেন, চলতি বছর মার্চের মাঝামাঝি থেকে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সরকারের সকল পরিকল্পনা ও প্রত্যাশাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, গত বছরের শেষদিকে যখন বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ অনেকটা কমতে শুরু করেছিল, তখন আশান্বিত হয়েছিলাম যে বিশ্ববাসী বুঝি এই মরণঘাতী ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। কিন্তু মার্চের মাঝামাঝি থেকে দ্বিতীয় ঢেউ আমাদের সকল পরিকল্পনা ও প্রত্যাশাকে নস্যাৎ করে দেয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ভাইরাস একদিকে যেমন অগণিত মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে, অন্যদিকে ক্ষতিসাধন করছে মানুষের জীবন-জীবিকার। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতির উপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে এই ভাইরাস। জনসমাগম এড়াতে না পারলে এ রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, এ কারণে কষ্ট হবে জেনেও আমরা বাধ্য হয়েছি মানুষের স্বাভাবিক চলাচলের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে। দোকান-পাট, শপিং মলসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু রাখতে হচ্ছে। একই কারণে গণপরিবহন চলাচলের উপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপনের উপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, কোনভাবেই এই ঈদ উদযাপন যাতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির উপলক্ষ না হয়ে উঠে, সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আবেগের বশবর্তী হয়ে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে যাবেন না।

করোনা প্রতিরোধে ঈদের জামাত নিয়ে সরকারের বিধিনিষেধ মনে করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্বাস্থ্যখাতে নেয়া নানা সরকারি উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে আমরা যেমন সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছি, তেমনি আক্রান্তদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা চিকিৎসা সক্ষমতা অনেকগুণ বৃদ্ধি করেছি।

তিনি বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ টিকা রপ্তানির উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে সরবরাহ ব্যবস্থায় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিকল্প উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছি। খুব শিগগিরই দেশে টিকা আসতে শুরু করবে। দেশেই যাতে টিকা উৎপাদন করতে পারি সে ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। নিজেদের টিকা তৈরিতে কয়েক মাস সময় লাগবে। আমরা দেশের সকল নাগরিককে টিকার আওতায় নিয়ে আসবো, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাস শুধু মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে না, এই ভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে ফেলেছে। সংক্রমণ এড়াতে লক-ডাউন বা সাধারণ ছুটি বলবৎ করতে হয়েছে। কোনোভাবেই রোগীর সংখ্যা বাড়তে দেওয়া যাবে না।

বিভিন্ন পেশার মানুষদের সরকারি সহায়তার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, জনগণের সহযোগিতায় এবং আমাদের সরকারের সময়োচিত কার্যক্রম গ্রহণের ফলে আমরা বিগত এক বছর করোনাভাইরাস মহামারি জনিত আর্থিক অভিঘাত খুব ভালোভাবেই সামাল দিতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা যখন প্রথম ঢেউ সামলিয়ে অর্থনীতিকে সাবেক অবস্থার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসার পর্যায়ে, তখনই মার্চ মাসে দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হেনেছে। এতে করে আমাদের প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধিতে হয়তো খানিকটা ভাটা পড়বে। সূত্র: বিবিসি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত