আজ একুশে বইমেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২১, ১৩:৪১

সাহস ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বিকেল ৩টায় তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা-২০২১ উদ্বোধন করবেন।

বাংলা একাডেমীর পরিচালক ও একুশে বইমেলা কমিটির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৮ মার্চ বিকেল ৩টায় তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বইমেলা উদ্বোধন করবেন।

এবারের অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ বঙ্গবন্ধু রচিত ও বাংলা একাডেমি প্রকাশিত ‘আমার দেখা নয়াচীন’-এর ইংরেজি অনুবাদ ‘নিউ চায়না-১৯৫২’ এর আনুষ্ঠানিক প্রকাশনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই গ্রন্থ উন্মোচন করবেন।

পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী মনোনীতদের মাঝে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২০ হস্তান্তর করবেন। একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন এবং স্বাগত বক্তৃতা করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

প্রতি বছর ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলনের স্মরণে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে মাসব্যাপী বইমেলা শুরু হলেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এবার বিলম্ব হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যদিও, ২৮ দিনব্যাপী বইমেলা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলার কথা থাকলেও, করোনা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে মেলাটি যে কোন সময় বন্ধ করে দেয়া হতে পারে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২১ এর মূল থিম ‘বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী’।

এই প্রথমবারের মতো, একটি প্রবেশ পয়েন্ট থাকবে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের তিনটি প্রবেশ পয়েন্টের সাথে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ (আইইবি) পাশে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। বৈশি^ক মহামারী করোনার কারণে এর সংক্রামণ ঠেকাতে বইমেলায় নেওয়া হয়েছে তিন স্তরের নিরাপত্তা। প্রবেশ পথে থাকবে ‘নো মাস্ক-নো এন্টি’ সম্বলিত লোগো।

সব মিলিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩টি প্রবেশ পথ ও ৩টি বাহির পথ থাকবে। প্রত্যেক প্রবেশ পথে সুরক্ষিত ছাউনি থাকবে, যাতে বৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যে মানুষ আশ্রয় নিতে পারেন। বিশেষ দিনগুলোতে লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক, বাংলা একাডেমির ফেলো এবং রাষ্ট্রীয় সম্মাননাপ্রাপ্ত নাগরিকদের জন্য প্রবেশের বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে।

বইমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাসমূহ। নিñিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলা এলাকাজুড়ে ৩ শতাধিক ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বইমেলা সম্পূর্ণ পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। মেলাপ্রাঙ্গণ ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (সমগ্র মেলাপ্রাঙ্গণ ও দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি হয়ে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত এবং দোয়েল চত্বর থেকে শহিদ মিনার হয়ে টিএসসি, দোয়েল চত্বর থেকে চাঁনখারপুল, টিএসসি থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত) নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকবে। মেলার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং নিয়মিত ধূলিনাশক পানি ছিটানো এবং প্রতিদিন মশক নিধনের সার্বিক ব্যবস্থা করা হয়েছে।

১৯ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

দর্শনার্থীদের মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশের জন্য কঠোরভাবে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলতে হবে। সেখানে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা, হাত ধোয়া ও স্যানিটাইজিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে।

বইমেলা সবার জন্য কার্যদিবসগুলোতে বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং সরকারি ছুটির দিনগুলোতে সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। দুপুরের খাবার ও নামাজের জন্য এক ঘন্টা বিরতি থাকবে। স্বাধীনতার সুবর্ণ-জয়ন্তী উপলক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন বিষয়কেন্দ্রিক আলোচনার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন এবং গত এক বছরে প্রয়াত বিশিষ্ট জনদের জীবন ও কৃতি নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মাসব্যাপী প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রতিদিনই রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতা ও আবৃত্তিপাঠ।

২০২০ সালে প্রকাশিত শিশুতোষ গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মান বিচারে সর্বাধিক গ্রন্থের জন্য ১টি প্রতিষ্ঠানকে ‘রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার’ এবং এ-বছরের মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের মধ্য থেকে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে ‘কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হবে।

মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠান সরাসরি স¤প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। এছাড়া মেলা প্রাঙ্গণ থেকে বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মেলার তথ্যাদি প্রতিদিন সরাসরি স¤প্রচার করবে। এফ এম রেডিওগুলোও মেলার তথ্য প্রচার করবে। গ্রন্থমেলার খবর নিয়ে প্রতিদিন বেশ কয়েকটি বুলেটিন প্রকাশিত হবে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম প্রতিদিন মেলার তথ্য প্রচার করবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত