এমসি কলেজে গণধর্ষণ: অভিযোগ গঠনের শুনানি ১৭ জানুয়ারি

প্রকাশ : ১৩ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:২৬

সাহস ডেস্ক
সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে গণধর্ষণ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ১৭ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছে আদালত।

সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে গণধর্ষণ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ১৭ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছে আদালত। আদালত সূত্র জানায়, বাদীপক্ষ চার্জশিটের ওপর আদালতে কোনো আপত্তি না দেয়ায় আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে।

বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সিলেট বিভাগীয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক চৌধুরী এ দিন ধার্য করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের পিপি রাশিদা সাঈদা খানম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) গ্রহণ করে আদালত। এ সময় মামলার চার্জশিটভুক্ত ৮ আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৩ ও ১০ জানুয়ারি দুদফায় মামলায় অভিযোগপত্র গ্রহণের তারিখ পেছানো হয়। গত ৩ ডিসেম্বর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আবুল কাশেম আদালতে ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরান (র.) থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।

অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত সাইফুর রহমানকে প্রধান করে ছয়জনের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণে জড়িত থাকা এবং অপর দুইজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়া সরাসরি জড়িত এবং রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম তাদের সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট নগরীর বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। কলেজের গেট থেকে স্বামীসহ তাকে ধরে ছাত্রাবাসে এনে স্বামীকে বেঁধে নববধূকে ধর্ষণ করা হয়।

সে রাতে ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেন। আসামিরা হলেন- সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুম। তাদের সাথে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে মিসবাউর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারের পর তাদের প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে সবাই ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। গ্রেপ্তারকৃত সবার ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় সিআইডির বিশেষায়িত ল্যাবে পাঠানো হলে ডিএনএ প্রতিবেদন গত ৩০ নভেম্বর আদালতের কাছে পৌঁছায়।

সংঘবদ্ধ এ ধর্ষণের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে প্রতিবেদন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও মহি উদ্দিন শামিমের বেঞ্চে জমা দেয়া হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষও তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন কলেজ অধ্যক্ষের কাছে জমা দিয়েছে। তবে তা প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়াও, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি তদন্ত শেষে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসানের ছাত্রত্ব ও সার্টিফিকেট বাতিল করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এমসি কলেজ থেকে তাদেরকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সেই রাতে ছাত্রাবাসে সাইফুর রহমানের দখলে থাকা একটি কক্ষ থেকে বিভিন্ন অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সাইফুরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করেছে। এ মামলায় সাইফুর রহমান ও শাহ মাহবুবুর রহমান রনিকে অভিযুক্ত করে আদালতে পৃথক একটি চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত