৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দিতে সৌদি আরবের চাপ

প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৬:১৪

সাহস ডেস্ক

সৌদি আরবে অবস্থিত ৫৪ হাজার রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট না দিলে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। এই রোহিঙ্গারা ৩০-৪০ বছর ধরে সৌদি আরবে অবস্থান করছে এবং সৌদি আরব নিজেই এর মধ্যে অনেক রোহিঙ্গাকে নিয়ে গিয়েছিল।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন জানান, সৌদি আরবের তৎকালীন বাদশা স্বপ্রণোদিত হয়ে এবং রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখে ৮০ ও ৯০-এর দশকে অনেক রোহিঙ্গাকে নিয়ে গেছেন। অনেকে সরাসরি গেছে। কেউ কেউ হয়তো বাংলাদেশ হয়ে গেছে। এখন তারা বলছে ৫৪ হাজার রোহিঙ্গা সেখানে আছে। তারা বলছে, এদের কোনও পাসপোর্ট নেই এবং কোনও কাগজ নেই। তারা আরও বলছে, এদের তোমরা পাসপোর্ট ইস্যু করো। আমরা বলেছি, যারা আগে পাসপোর্ট পেয়েছে এবং তাদের পাসপোর্টের কাগজ যদি থাকে তবে আমরা নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করবো। কিন্তু এরা যদি আমাদের লোক না হয়, তবে আমরা নেবো না।

রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট না দিলে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হবে এমন হুমকি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, জুনিয়র লেভেলে কেউ কেউ বলছে তোমরা যদি এদের না নাও বা পাসপোর্ট ইস্যু না করো তবে তোমাদের দেশ থেকে এত লোক আনছি, এটা আমরা বন্ধ করে দেবো এবং তোমাদের যে ২২ লাখ লোক আছে তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক অবস্থান নেবো। এই কথাগুলি জুনিয়র লেভেল থেকে আমাদের বলা হয়েছে। কিন্তু আমার মনে হয় এটি টিকবে না।

তিনি বলেন, পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি বিষয়টি দেখছেন। কিন্তু সৌদি আরবের কিছুটা তাগাদা আছে। তারা বলছে, নাগরিকত্বহীন কোনও ব্যক্তি তারা রাখবে না। তারা বলছে তোমরা এটি তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করো। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রায়ই তারা এ প্রশ্নটা তোলে।

সৌদি আরবে যাওয়ার জন্য আন্দোলনরত প্রবাসীদেরকে বিশৃঙ্খলা না করার অনুরোধ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনাদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা বিশৃঙ্খলা করবেন না। আমরা সৌদি সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। সৌদি সরকার এ ধরনের কর্মকাণ্ড পছন্দ করেন না। তবে শান্ত থাকলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

মন্ত্রী বলেন, আজ আমাদের বৈঠকে সৌদি আরবে লোক পাঠানো প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল। প্রবাসীদের দাবি ছিল তারা যদি এখন না যেতে পারে তবে তাদের ভিসা বাতিল হয়ে যাবে। আমরা সৌদি সরকারের কাছে মঙ্গলবার অনুরোধ করেছি, তিন মাস তাদের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য এবং যাতে এই সুবিধা বিনা খরচে পায়।

তিনি বলেন, সৌদি এয়ারলাইন্স যতগুলো অনুমতি চেয়েছে সবগুলো অনুমতি দিয়েছি যাতে করে সহজে যেতে পারে। এছাড়া বিমান তৈরি আছে। যে মুহূর্তে ল্যান্ডিং রাইট পাবে, তখনই ফ্লাইট চলাচল শুরু করবে। সৌদি সরকার আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে অত্যন্ত কড়া। যদি আইনশৃঙ্খলা বিরোধী কাজ বা জটলা দেখানো হয় তবে এটি তারা বরদাস্ত করে না।

তিনি বলেন, তারা এখানকার বিষয়গুলো অবলোকন করছে। টেলিভিশন মিডিয়াতে যা দেখানো হচ্ছে সেটি স্টাডি করছে। আমাদের ভয় হলো, তারা যদি দেখে আন্দোলনকারীরা জটলা করছে, তবে হয়তো তাদের ভিসা বাতিল করে দেবে কিংবা কাজ বাতিল করে দেবে। এ বিষয়ে তারা খুব শক্ত। তারা যদি বাতিল করে তবে আমাদের কিছু করার নাই। প্রবাসীরাই তখন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আগেও এ ধরনের ঘটনা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত