পালিত সন্তানের হাতে খুন হন সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা

প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২০, ০৮:০৭

সাহস ডেস্ক

টাকা লোভে কৃষি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার, ছুম্মা খাতুন ও তাদের পালিত শিশু সন্তান সানজিদাকে হত্যার পর নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে পাশের মসজিদের ইমাম তানভীর হোসেন (২৫)। দেড় বছর আগে তানভীর হোসেনকে ছেলের মতো আপন করে নিয়েছিলেন তারা।

রবিবার (৭ মে) পাবনার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে তানভীর হোসেন।

পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আরাফাত লেনিন জানান, আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছি। লাশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকারীকে চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বছর দেড়েক আগে তানভীর হোসেনকে আপন করে নেন আব্দুল জব্বার ও তার স্ত্রী। নিঃসন্তান এই দম্পতির পালক নেওয়া এক মেয়েও রয়েছে, তার বয়স ১২ বছরের। যাকে একদিনে বয়সে নিয়ে এসেছিলেন তারা। ছেলের মতো তানভীরকেও আদর করতেন তারা। ব্যাংক, পোস্ট অফিসে টাকা লেনদেনেও তানভীরকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন আব্দুল জব্বার।

পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, টাকা পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেওয়ার জন্য জব্বার ও তার পরিবারের আরও দুই সদস্যকে হত্যার পরিকল্পনা করে তানভীর। গত ২৯ মে ছুটি নিয়ে হরিপুর গ্রামের বাড়ি চলে যায় সে। কিন্তু ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ৩১ মে পাবনা ফিরে আসে। ওই রাতে ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল জব্বারের বাড়িতে অবস্থান নেয় তানভীর এবং ঘুমায় আব্দুল জব্বারের সঙ্গে।

তিনি বলেন, রাত ৪টার দিকে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে যাওয়ার সময় জব্বারের পেছন থেকে গলায় গামছা পেছিয়ে ধরে তানভীর। জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান জব্বার। এরপর ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জব্বারের স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদাকে (১২) কুপিয়ে ও কাঠের বাটাম দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে তানভীর। স্ত্রী ও মেয়েকে হত্যার পর জব্বারের কাছে ফিরে এসে তাকে জীবন্ত পেয়ে বাটাম দিয়ে পিটিয়ে মৃত্যু ‍নিশ্চিত করে। তারপর বাথরুমে গিয়ে রক্তমাখা কাপড়-চোপড় ধুয়ে গোসল করে বাসায় তালা দিয়ে নগদ ২ লাখ টাকা, এক লাখ ভারতীয় রুপি ও স্বর্ণের গহনা নিয়ে পালিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, ঘটনার পর বাড়িটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় ভেতরে কী হয়েছে তা কেউ টের পায়নি। বাড়ির ভেতরে থেকে পচা গন্ধ আসায় স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। দরজা ভেঙে ৫ জুন তাদের তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত