বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের টেস্ট নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সন্দেহ

প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২০, ১৩:৩১

সাহস ডেস্ক

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে যেভাবে টেস্ট করা হচ্ছে তাতে প্রকৃত চিত্র ফুটে উঠছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত প্রায় দুই সপ্তাহ যাবত প্রতিদিন যতগুলো নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে তারমধ্যে ২০ থেকে ২২ শতাংশ মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যাচ্ছে। এটি প্রকৃত চিত্র নয় বলে মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

এক বিশেষ প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। তারা আশংকা করছেন, সম্ভাব্য রোগীদের নাক ও মুখ থেকে ঠিকমতো নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞদের ধারনা, রোগীর নমুনা ঠিকমতো সংগ্রহ করা না করা হলে কোন ব্যক্তির মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ থাকলেও সেটি শনাক্ত করা সম্ভব হবে না। সঠিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা না হলে সংক্রমণের বিস্তার ঠেকানো রীতিমতো অসম্ভব।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বেনজির আহমেদ বলেন, নাক ও মুখ থেকে সঠিক পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করা জরুরি। সবক্ষেত্রে সেটি ঠিকমতো হচ্ছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। নির্ভুল ফলাফল পেতে পাঁচটি বিষয় নিশ্চিত করা জরুরি। সেগুলো হচ্ছে, কার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, কিভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, স্যাম্পল ঠিকমতো সংরক্ষণ করা, স্যাম্পল ঠিকমতো টেস্ট করা, সঠিক রিপোর্ট তৈরি করা।

তিনি বলেন, ভাইরাসটা কখনো থ্রোটে থাকবে, কখনো নস্ট্রিল-এ থাকবে। কখনো দুটোতেই থাকবে। এজন্য দুটো জায়গা থেকেই নমুনা নিতে হবে। আমাদের ন্যাজাল যে ক্যানেলটা আছে, এই ক্যানেলের ওয়াল থেকে সোয়াব নিলে এটা ঘুরিয়ে-ঘুরিয়ে নিতে হবে। আমি যদি শুধু নাকে ঢুকোই আর বের করি এবং ওয়ালটাকে যদি টাচ না করি, সেখানে কিছু আসবে না। কারণ ভাইরাসটা তো থাকে ওয়ালে।

বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় ৫০ টি ল্যাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এসব ল্যাবের সাথে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণে জড়িত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনিও বলেন, দ্রুততার সাথে কাজ করতে গিয়ে প্রশিক্ষণের ঘাটতি রয়ে গেছে। আমরা কন্টিনিউয়াস ট্রেনিং দিচ্ছি। ট্রেনিং এতো কুইকলি করতে হয়েছে যে অনলাইন ট্রেনিং ছাড়া অন্য কোন উপায়ে ট্রেনিং দেয়া সম্ভব ছিল না।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য সঠিক টেস্ট এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে ফলাফল পাওয়াটা বেশ জরুরি। সেটি না হলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়াতেই থাকবে। কিন্তু অনেকে অভিযোগ করছেন, অনেক ক্ষেত্রে নমুনা দেবার পরে রিপোর্ট পাবার জন্য চার থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত