চার বৃদ্ধের বাড়ি গিয়ে হাত ধরে ক্ষমা চাইলেন ইউএনও

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২০, ১৭:৩৯

অনলাইন ডেস্ক

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের চিনেটোলা বাজারে চার বৃদ্ধের বাড়ি গিয়ে ক্ষমা চাইলেন মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফী। পাশাপাশি লাঞ্ছিতদের পরিবারের সদস্যদের চাল, ডাল, আলু, তেল, লবণ এবং ক্ষারযুক্ত সাবান দেওয়া হয়।

শনিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফী উপজেলার চিনাটোলা এলাকায় ওই তিন বৃদ্ধের বাড়ি যান।

ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী সবাইকে ১০ কেজি করে চাল দেন। তাদের নিরাপদে বাড়িতে থাকার জন্য বলেন। এরপর যদি খাবার ফুরিয়ে যায় তাহলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। তাদের বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন ইউএনও।

এছাড়া মুজিববর্ষে তাদের প্রত্যেককে ঘর বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী।

মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, শনিবার বেলা ১২টার দিকে ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী  চিনেটোলা বাজারে লাঞ্ছনার শিকার ওই বয়োজ্যেষ্ঠদের বাসায় যান। এসময় তাদের প্রত্যেকের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন। তাছাড়া তাদের মাঝে খাদ্যদ্রব্য বিতরণ এবং প্রত্যেককে ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দেন।

ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, তারা সকলেই বয়োজ্যেষ্ঠ। আমি যখন হাত ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করি, তাদের মুখে হাসি দেখেছি। তারা সকলেই বাবার বয়সী। উনারা আমাদের ক্ষমা করেছেন। আপৎকালীন এই সময়ে তারা যেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেন সেকারণে কিছু খাদ্যদ্রব্য ও সাবান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অগ্রাধিকারভিত্তিতে তাদের ঘর করে দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৮ মার্চ) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসান যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় মাস্ক ব্যবহার না করায় তিন বৃদ্ধকে জনসম্মুখে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে শাস্তি দেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও সমালোচনার ঝড়ে উঠে।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েমা হাসানের নেতৃত্বে শুক্রবার বিকাল থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার চিনাটোলা বাজারে অভিযানের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়েন প্রথমে দুই বৃদ্ধ। এর মধ্যে একজন বাইসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন। অপরজন রাস্তার পাশেই বসে কাঁচা তরকারি বিক্রি করছিলেন। তবে তাদের মুখে মাস্ক ছিল না।

পুলিশ এ সময় ওই দুই বৃদ্ধকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে সাইয়েমা হাসান শাস্তি হিসেবে তাদের কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন জনসম্মুখে। শুধু তাই নয়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই তার মোবাইল ফোনে এ চিত্র ধারণ করেন। পরবর্তীতে আরও এক ভ্যানচালক বৃদ্ধকেও একইভাবে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন তিনি।

এসি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসান স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে বৃদ্ধদের এ শাস্তি দেয়ার সত্যতা স্বীকার করেন।