শিক্ষার্থীর চিঠি ভাইরাল, ইটভাটার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ

প্রকাশ : ২৮ মার্চ ২০১৯, ১১:৩৯

সাহস ডেস্ক

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে হযরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বাঁচার আকুতি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠিটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। এ অবস্থায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইটভাটার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “মাননীয় ডিসি স্যার দিনাজপুর, ছালাম নিবেন। আমরা দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হযরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ি। আমাদের স্কুলের পাশে একটি ইটভাটা রয়েছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় আমাদের শ্বাসকষ্ট হয়, চোখে জ্বালা করে। এছাড়া পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থায় এখন আবার স্কুলের পাশে আরেকটি ইটভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে আমাদের আরও ক্ষতি হবে। আমরা কীভাবে বাঁচবো? আপনি আমাদের বাঁচান।”

বুধবার (২৭ মার্চ) বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হক পুলিশ নিয়ে ইটভাটাটিতে অভিযানে যান। কিন্তু গিয়ে দেখেন ভাটাটি পরিচালনার জন্য উচ্চ আদালতের রিট রয়েছে। পরে তিনি মালিককে বুঝিয়ে সেটি বন্ধের কার্যক্রম গ্রহণ করেন।

শিক্ষার্থী মিশু জানায়, ভাটার ধোয়ায় তার মতো বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর চোখে জ্বালা করে। ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারে না। ভাটাটি বন্ধ করে দিলে তারা ভালোভাবে শ্বাস নিতে পারবে।

শিশুটির বাবা গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মমিনুল হক বলেন, ‘আমার মেয়ে নিজেই চিঠিটি লিখে আমার ফেসবুক আইডি থেকে সেটি পোস্ট করেছে। বিদ্যালয়ের পাশে ইটভাটা হওয়ায় শিশুরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে। এছাড়া পুকুরের মাছের ফলনও দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।’

পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হক বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বুধবার দুপুর তিনটায় পার্বতীপুরের যমুনা ব্রিক্স নামে ইটভাটায় গিয়ে কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায় সেটির রিট পিটিশন রয়েছে। পরে ভাটা মালিককে বুঝিয়ে আপাতত ইটভাটাটির কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।’

জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশুর ইটভাটা বন্ধের অনুরোধের চিঠি দেখি। এরই প্রেক্ষিতে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহানুল হককে ভাটাটি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন থাকায় আইনগতভাবে ভাটাটি বন্ধ করা না গেলেও পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতির কথা বিবেচনা করে ভাটা মালিককে আপাতত ইট ভাটাটি বন্ধ রাখতে বলা হয়।’

পরবর্তীতে আইনগত বিষয়ে বিবেচনা করে ভাটাটির ব্যাপারে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত