ছাত্র ধর্মঘটে ছাত্রলীগের হামলায় রাবিতে উত্তেজনা

প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০১৮, ১৫:৫৬

রাবি প্রতিনিধি

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ছাত্র ধর্মঘট পালন করতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার অভিযোগ তুলেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা প্রগতিশীল ছাত্রজোট।

সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জোহা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসে থমথমে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
 
ছাত্রজোট নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের উপস্থিতিতে বহিরাগত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কর্মসূচিতে বাঁধা দেয়। এ সময় ছাত্র ফেডারেশন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বিল্পবী ছাত্রমৈত্রী ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের মারধর করা হয়।

বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে ২৩ জানুয়ারি ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থী’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ে ঢাবি উপাচার্যকে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করলে ছাত্রলীগ গিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ২৯ জানুয়ারি সারাদেশে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এরই অংশ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল ছাত্রজোট অবস্থান ধর্মঘট পালন করছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি লিটন দাস অভিযোগ করে বলেন, আমরা বেলা সাড়ে ৭টা থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করি। পরিবহন দফতরে বাস বন্ধ রাখার জন্য অবগত করা হয়। কিন্তু প্রক্টর এসে ধর্মঘট কর্মসূচি শেষ করে চলে যেতেন বলেন। কিন্তু আমরা সেখানেই অবস্থান করলে প্রক্টরিয়াল বডি আমাদের সঙ্গে মারমুখি আচরণ করেন। পরে বাস যেতে বাধা দিলে প্রক্টরিয়াল বডি আমাদের ধাওয়া করে। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রীলগের সহ-সভাপতি ইলিয়াস হোসেন ও ফিরোজ আহমেদ। তারা ছাত্রজোটের কয়েকজন নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ধাক্কাধাক্কি ও কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। একপাশে পুলিশ আর অন্য পাশে সহকারী প্রক্টর ও তাদের মাঝে অবস্থান করে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা হামলা চালিয়েছে। এসময় ছাত্রজোটের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।

বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিলিপ রায় বলেন, জোহা চত্বরে আমরা ছাত্রজোট শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। প্রক্টর আমাদের সাথে কথা বলতে আসলে আমরা খুব বিনীতভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি যে, ধর্মঘটে কোনো গাড়ি চালানো যাবে না। এসময় উনি উত্তেজিত হয়ে যান। পুলিশের দিকে নির্দেশ করেন, আমরা যদি গাড়ি আটকানোর চেষ্টা করি তবে আমাদের গ্রেপ্তার কিংবা আমাদের ওপর হামলা করা হবে। হঠাৎ ছাত্রলীগের নামধারী দু’জন এসে আমাদের অনেককে কিলঘুষি মারে।

এদিকে প্রতিবাদে বেলা ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এসময় তারা প্রশাসনের উপস্থিতিতে এ ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা জানান।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, হামলাকারীরা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির কেউ না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, আমাদের ছাত্রলীগের কেউ ওখানে ছিল না। একটা ছবি দেখলাম, ওখানে ছাত্রলীগের গত কমিটির দুই সহ-সভাপতি ছিলেন। বর্তমান ছাত্রলীগ কমিটির কেউ ওখানে উপস্থিত ছিলেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, এখানে ছাত্রলীগ ছিল না। আমি সকাল থেকেই প্রশাসনের সামনে ছিলাম। প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলে বাস ছাড়তে বলেছি। আমাদের বাস ছেড়ে গেছে। আমাদের শুধু সকালের সিডিউলের কিছু বাস বন্ধ ছিল। তারপর থেকে সকল বাস চলবে।

সাহস২৪.কম/রিয়াজ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত