চাঁপাইনবাবগঞ্জ

দেশসেরা নিরাপদ আম বিদেশে রপ্তানী করব: কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৬ মে ২০২১, ২০:৪১

কৃষিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, গার্মেন্টস পণ্যের মত কৃষিপণ্যও বিদেশে রপ্তানী করব। এর মধ্যে থাকবে দেশের সেরা আম। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম এতে গুরত্ব পাবে। আম রপ্তানীর ব্যাপারে জাপান, জার্মানীসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদুতদের সাথে আলোচনা হয়েছে। বিদেশীরা বাংলাদেশের আম পছন্দ করে। তবে তা হতে হবে নিরাপদ আম।

বৃহস্পতিবার (৬ মে) বিকেলে মন্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যাণতত্ব গবেষণা কেন্দ্রে (প্রাক্তন আম গবেষণা কেন্দ্র) আয়োজিত বারি আম-৪ (হাইব্রীড) এবং বারি আম-১১ (বারোমাসি) এর উৎপাদনশীলতা প্রদর্শণ শীর্ষক কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আম চাষে কৃষকদের ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হবে। আম রপ্তানীর জন্য কৃষি বিপনণ, প্যাকেজিং, নিরাপদকরণ সুবিধে বাড়াতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী বিমানবন্দরের নিকট ও ঢাকার নিকুঞ্জ এলাকাতে প্লান্টসহ বহুমুখী অবকাঠামো সুবিধে গড়ে তোলা হবে।

মন্ত্রী বলেন, দেশকে উন্নত করতে হলে গ্রামকে শহরে রপান্তরিত করতে হবে। গ্রামে সুযোগ সুবিধে বাড়াতে হবে। তাহলে হবে 'আমার গ্রাম আমার শহর' বাস্তবায়ন। এজন্য আয় বাড়াতে হবে। আর আয় বাড়াতে হলে কৃষির বহুমুখীকরণ করতে হবে। কৃষি পণ্যের বহুমুখীকরণ করতে হবে। তাহলেই কৃষি পণ্য রপ্তানী করে দেশের আয় বৃদ্ধি করা যাবে।

মন্ত্রী পৃথিবীর অন্যতম সেরা ফল হিসেবে আমের কথা উল্লেখ করে বলেন, তার মধ্যে বাংলাদেশের আম ভাল। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম গুণেমানে শ্রেষ্ঠতম।

তিনি বলেন, এই জেলায় পথ চলতে গিয়ে আমের গাছ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। তিনি নতুন জাতের আম উৎপাদনের জন্য বিজ্ঞানীদের প্রশংসা করেন। আপনাদের আম গাছ ব্যবস্থাপনায় আরও কাজ করতে হবে। গবেষণার মাধ্যমে আমের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। বিনামূল্যে চারা করে নতুন জাত ছড়িয়ে দিতেও তাদের কাজ করতে হবে।

আ'লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক কৃষিতে অব্যহত বিনিয়েগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী কৃষিতে অব্যহত প্রণোদনা ও ভর্তূকি দিচ্ছেন। সারের ও কৃষি পণ্যের দাম কমানো হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুই স্বাধীন দেশে প্রথম উপলগ্ধি করেছিলেন, কৃষি ও কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। স্বাধীন দেশের প্রথম বাজেটে তিনি সে অনুযায়ী বরাদ্দ দিয়েছিলেন। আজ আর বাংলাদেশ ভিক্ষের দেশ নয়, অনাহার বা মঙ্গার দেশ নয়। নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন, ক্ষমতায় গেলে কেউ না খেয়ে মরবে না। তিনি সেই কথা রেখেছেন। এটা সরকারের বড় সাফল্য।

কৃষি গবেষণা ইনিষ্টিটিউট মহাপরিচালক ড. নাসিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আমের সুযোগ, সম্ভবনা, সমস্যা ও বিভিন্ন প্রস্তাবনা নিয়ে কথা বলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌসী ইসলাম জেসী, সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আ'লীগ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হরিদাস চন্দ্র মোহন্ত, আমচাষী ইসমাইল হোসেন খান, কৃষাণী শরিফা খাতুন বেবী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন চেয়ারম্যান ড. অমিতাভ সরকার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমলা রঞ্জন দাশ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইইনষ্টিটিউট মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবীর, বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনিষ্টিটিটিউট মহাপরিচালক ড. আমজাদ হোসেন, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আব্দুল বাতেন, জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ প্রমুখ।

এর আগে সকালে মন্ত্রী জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার চিনিয়াতলা এলাকায় কৃষি গবেষণা ইনিষ্টিটিউটের আয়োজনে ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগীতায় উচ্চ ফলনশীল ব্রি-৮১ জাতের ধান কর্তন ও সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপরোক্ত অতিথিদের নিয়ে উপস্থিত ছিলেন।