পিরোজপুরের নাজিরপুরে মুক্তা চাষে সফলতা!

প্রকাশ | ৩১ জানুয়ারি ২০২১, ১৩:৩২

পিরোজপুরের নাজিরপুরে মুক্তা চাষে সফলতা পেয়েছেন চাষি মোয়াজ্জেম হোসেন শিকদার। উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুরে মুক্তা চাষ করছেন তিনি।

৪২ হাজার টাকা খরচ করে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকায় বিক্রি করবেন এমনটি আশা তার। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির নিজস্ব মাত্র ছয় শতাংশ পুকুরে তিনি মুক্তার চাষ করছেন।

পুকুরে ভাসমান অবস্থায় মুক্তা চাষে জন্য ঝিনুক রাখা নেটের ব্যাগ রয়েছে। পুরো পুকুর জুড়ে রশিতে বেঁধে রাখা রয়েছে প্রতিটি ব্যাগ।

আর এ রশি ও ব্যাগগুলো  পানিতে ঝুলিয়ে রাখতে ভাসমান খালি বোতলে রশি বেঁধে তা ভাসিয়ে রাখা হয়েছে।

মুক্তা চাষি মোয়াজ্জেম জানান, উপজেলা মৎস্য অফিসার গৌতম মন্ডলের উৎসাহে তিনি পরীক্ষামূলকভাবে বাড়ির পুকুরে ৭০০ ঝিনুক নিয়ে চাষ শুরু করেন।

কুষ্টিয়া থেকে এ ঝিনুক কেনেন। প্রতিটি ঝিনুক সেটিংসহ ৪৫ টাকা করে খরচ হয়েছে। এ ছাড়া ঝিনুকের খাবার তৈরি ও অন্যান্য ব্যয়সহ মোট ৪২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সাত মাস আগে তিনি এ ঝিনুকগুলো চাষ শুরু করেছেন। আগামী এক মাসের মধ্যে তা বিক্রি করবেন।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা গৌতম মণ্ডল জানান, ওই চাষিকে কুষ্টিয়া থেকে মুক্তা চাষের জন্য ঝিনুকগুলো সংগ্রহ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ঝিনুক থেকে একটি করে মুক্তা আসলেও প্রায় সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা আসবে। ঝিনুকগুলো নিউক্লিয়ার ডাইসে চাষ করা হচ্ছে। প্রথমবার চাষ করায় প্রতিটি ঝিনুক থেকে একটি করে মুক্তা আসবে। তবে প্রতিটি ঝিনুক থেকে ৫-৬টি মুক্তা পাওয়া যায়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরও জানান, ঝিনুক সংগ্রহ করে তার খোলসের ভেতরের শিরা কেটে একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় মুক্তা তৈরির জন্য সেটিং করা হয়। ঝিনুকগুলো যাতে মাটিতে না মিলে যেতে পারে সে জন্য একটি নেটের ব্যাগে করে পানিতে ঝুলিয়ে রাখতে হয়। ব্যাগ যাতে সব সময়ই পানিতে থাকতে পারে সে জন্য পুকুরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে রশি বেঁধে ওই সব ব্যাগ ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এজন্য কিছু খালি বোতলের ছিপি আটকে বোতলগুলো ওই রশিতে বেঁধে দিতে হবে।

আট মাস পর প্রতিটি  ঝিনুক থেকে পরিপূর্ণ মুক্তা পাওয়া যায়। দুই ধরনের মুক্তা রয়েছে। একটি নিউক্লিয়ার ডাইস ও অন্যটি মেন্টাল টিস্যু। তবে মেন্টাল টিস্যুর থেকে নিউক্লিয়ার ডাইসের মুক্তার চাহিদা বেশি। নিউক্লিয়ার টিস্যু থেকে অন্য যেকোন আকৃতির মুক্তা তৈরি করা যায়। আর মেন্টাল টিস্যু থেকে অন্য আকৃতিতে পরিণত করার কোনো সুযোগ থাকে না। এসব  ঝিনুকের খাবার হিসেবে পানিতে সার প্রয়োগ করতে হয়। এ সার পানির উর্বরতা বৃদ্ধি করে ফাইটো প্লাংটন ও জুয়ো প্লাংটন বৃদ্ধির মাধ্যমে স্বাভাবিক খাদ্যের চাহিদা বৃদ্ধি করা হয়।