কৃষকরা বোরো ধান বিক্রিতে ভাল দাম পাচ্ছেন: কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২০, ২৩:৪১

সাহস ডেস্ক

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ‘কৃষকরা সফলভাবে ধান ঘরে তোলার পাশাপাশি বোরো ধান বিক্রিতে ভাল দাম পাচ্ছেন।’

আজ ১৪ মে (বৃহস্পতিবার) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে বোরো ধানের দাম এবং ধান কাটার অগ্রগতি বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে অনলাইনে মতবিনিময়কালে একথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশে এ বছর ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৪৭ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে হাওরের শতভাগ এবং সারা দেশের শতকরা ৪৮ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘অঞ্চলভেদে ধানের বাজার দরের কমবেশী রয়েছে। তাছাড়া ভেজা ও শুকনা ধান এবং মোটা- চিকন ধানের দামেও পার্থক্য রয়েছে।’

ব্রিফিংয়ে কৃষি বিভাগের ১৪টি অঞ্চল ও জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালকদের পাঠানো তথ্যানুসারে সারাদেশের বোরো ধানের দাম এবং ধান কাটার অগ্রগতি তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘এবার ধানের যা দাম আছে এটি মোটামুটি যুক্তিসঙ্গত। ধান-চালের দাম বাড়লে চাষি ও কৃষকেরা খুশি হয়। কিন্তু সীমিত আয়ের মানুষেরা কষ্ট করে। তাঁরা তাঁদের স্বল্প আয় দিয়ে প্রয়োজনীয় খাবার কিনতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘সেজন্য এ উভয় সংকট এড়াতে আমরা চাই একটা ব্যালেনস্ বা মাঝামাঝি অবস্থা, যাতে ধান-চাল বিক্রি করে চাষি ও কৃষকেরা খুশি হয়, অন্যদিকে সীমিত আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়।’

তিনি বলেন, ‘হাওর অঞ্চলের সিলেট জেলায় বর্তমানে ভেজা ধান ৭০০-৭৫০ টাকা, শুকনা ধান ৮০০-৮৫০ টাকা, মৌলভীবাজার জেলায় ভেজা ধান ৬৫০-৭৫০ টাকা, শুকনা ধান ৭৫০-৮০০ টাকা, হবিগঞ্জ জেলায় ভেজা ধান ৬৫০-৭০০ টাকা, শুকনা ধান ৭৫০-৮০০ টাকা, সুনামগঞ্জ জেলায় ভেজা ধান ৬৫০-৭৫০ টাকা, শুকনা ধান ৭৫০-৮০০ টাকা এবং নেত্রকোনা জেলায় ভেজা মোটা ধান ৬৫০-৬৮০ টাকা ও চিকন ধান ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।’

মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কুমিল্লা অঞ্চলে ৭৭ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। এ জেলায় মোটা ধান ৮০০-৮৫০ টাকা, চিকন ধান ৯০০ টাকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ভেজা ধান ৬০০-৭০০ টাকা, শুকনা ধান ৮০০ টাকা এবং চাঁদপুর জেলায় মোটা ধান ৮০০-৮৫০ টাকা ও চিকন ধান ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘খুলনা অঞ্চলে শতকরা ৭৩ ভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। খুলনা জেলায় মোটা ধান ৭৬০-৭৭০ টাকা, চিকন ধান ৮৮০- ৯০০ টাকা, বাগেরহাট জেলায় মোটা ধান ৭০০-৭৫০ টাকা, চিকন ধান ৮৫০- ৯০০ টাকা এবং সাতক্ষীরা জেলায় মোটা ধান ৮০০-৮২০ টাকা ও চিকন ধান ৯০০- ৯২০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ময়মনসিংহ অঞ্চলেও কৃষকেরা ধানের ভাল দাম পাচ্ছেন। শেরপুর জেলায় মোটা ধান ৬৫০-৭০০ টাকা, চিকন ধান ৭০০- ৭৫০ টাকা, ময়মনসিংহ জেলায় মোটা ধান ৭৫০-৮০০ টাকা, চিকন ধান ৮৫০- ৯০০ টাকা এবং জামালপুর জেলায় মোটা ধান ৬৫০-৭৫০ টাকা ও চিকন ধান ৮৫০- ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘যশোর অঞ্চলে শতকরা ৬২ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। যশোর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা ও মাগুরা জেলায় মোটা ধান ৮৫০-৯০০ টাকা, চিকন ধান ৯০০- ১০৫০ টাকা এবং কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলায় মোটা ধান ৬৫০-৭৫০ টাকা ও চিকন
ধান ৮৫০- ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।’

এছাড়াও বরিশাল অঞ্চলের পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও বরগুনা জেলায় ৮২০-৮৫০ টাকা এবং দিনাজপুর জেলায় ভেজা ধান ৬৭৫-৭০০ টাকা ও শুকনা ধান ৭৭৫- ৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, রাজশাহী জেলায় ভেজা ধান ৮০০-৮৫০ টাকা, নওগাঁ জেলায় মোটা ধান ৬০০-৬৫০ টাকা এবং চিকন ধান ৮৫০-৯০০ টাকা, রংপুর জেলায় ভেজা ধান ৬৮০-৭০০ টাকা এবং শুকনা ধান ৮১০-৮২০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কৃষকের ধানের ন্যায্য মূল্যপ্রাপ্তি এবং করোনা সময়কালে দেশের নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১০ লাখ মেট্টিক টন ধান, ১ দশমিক ৫ লাখ টন আতপ চাল, ১০ লাখ মেট্টিক টন সিদ্ধ চাল, এবং ৭৫ হাজার মেট্টিকটন গমসহ ২২ লাখ ২৫ হাজার মেট্টিক টন খাদ্যশস্য কিনবে সরকার।’

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে’- প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা মোতাবেক খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে যাতে কোন জমি পতিত না থাকে এবং আবাদযোগ্য জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয় সেজন্য কৃষি মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

ব্রিফিংকালে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নাসিরুজ্জামান, অতিরিক্ত সচিব ড. মোঃ আবদুর রৌফ এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত