জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা রেজুলেশন গৃহীত

প্রকাশ | ১৮ নভেম্বর ২০২১, ১১:১৭

অনলাইন ডেস্ক
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা

রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে গত জুলাইতে প্রথমবারের মতো জেনেভাতে সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশন গৃহীত হয়েছিল। একই ধারাবাহিকতায় নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে আরেকটি রোহিঙ্গা রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর জাতিসংঘে রোহিঙ্গা রেজুলেশন গৃহীত হয় ভোটের মাধ্যমে। তবে এ বছরই প্রথম সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশনটি গৃহীত হলো। 

স্থানীয় সময় বুধবার (১৭ নভেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে রেজুলেশনটি যৌথভাবে উত্থাপন করে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। 

এবারের রেজুলেশনটিতে ১০৭টি দেশ সহ-পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছে। যা ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসি ছাড়াও রেজুলেশনটিতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন ভৌগলিক অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেশ সমর্থন এবং সহ-পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজুলেশনটি গ্রহণকালে প্রদত্ত বক্তব্যে বলেন, জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হলো রোহিঙ্গা রেজুলেশন, যা এই সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের প্রেস উইং জানায়, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা প্রদান এবং জাতীয় কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কর্মসূচিতে তাদের অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ যে উদারতা ও মানবিকতা প্রদর্শন করেছে, রেজুলেশনটিতে তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। 

রেজুলেশনে প্রাথমিকভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১-এ জরুরি অবস্থা জারির প্রেক্ষাপট এর মতো বিষয়গুলোর প্রতি। রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দ্বিপাক্ষিক চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করা এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সকল মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করতে এবারের রেজুলেশনে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।  

রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক বিবেচনায় ২০১৭ সালে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে রোহিঙ্গাদের স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে মিয়ানমার ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’ 

সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত এবারের রোহিঙ্গা রেজুলেশনের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘একটি শক্তিশালী সমর্থন নিয়ে এবারের রেজুলেশন গৃহীত হলো যা রোহিঙ্গাদের মনে নতুন আশার সঞ্চার করবে যে জন্য তারা পথ চেয়ে বসে আছে।’

সাহস২৪.কম/এমআর